বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গাজার মানুষকে মিসরে হটিয়ে দেওয়ার ছক ইসরায়েলের

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের একটা কঠিন সময় চলছে। তিন সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল গাজায় গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে। অল্প জায়গায় সর্বোচ্চ ঘনবসতি থাকা মানুষদের অন্য প্রান্তে চলে যেতে বলেছে, যদিও ফিলিস্তিনিদের মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকা তো দূর মৌলিক অধিকারের সুযোগও নেই। গাজার এই সমস্যাকে পুঁজি করতে চায় ইসরায়েল। গাজা ও পশ্চিম তীর দুই দিকেই ফিলিস্তিনের মানুষ এখন অনেকটা বন্দীদশায় মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু এই দুই অংশের সঙ্গে যেসব দেশের সীমান্ত মিসর ও জর্ডান তাদের কেউ এসব মানুষকে ঠাঁই দিতে রাজি না। কিন্তু গাজা ভূখ কে একেবারে জনশূন্য করে ফেলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। সেখানকার সাধারণ মানুষকে মিসরের সিনাইতে সরিয়ে দিতে হামলা তীব্রতর করছে। আর এমনই ছক কষছে ইসরায়েল। ফলে এক ধাক্কায় ভিটেছাড়া হবেন ২৩ লক্ষ ফিলিস্তিনের মানুষ। ১৯৪৮ সালের মতো ফের বিশাল মাপের বিপর্যয় নেমে আসবে আরবদের ওপর। ইসরায়েলের এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেই তীব্র বিরোধিতা করেছে ফিলিস্তিন।

একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, ইসরায়েলের গোয়েন্দা বিভাগ ‘কনসেপ্ট পেপার’ নামে একটি নথি প্রকাশ করেছে। সেখান থেকেই জানা যাচ্ছে, গাজার সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেওয়া হবে সিনাইয়ের উত্তর দিকে। মরুভূমি এলাকায় তাদের জন্য শহরও গড়ে দেওয়া হবে। তার পর বিশেষ সিকিউরিটি জোন গড়ে তোলা হবে যেন ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলে ফিরে আসতে না পারে। তবে গাজাকে জনশূন্য করে দেওয়ার পর সেখানে কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য এখানে কিছুই লেখা নেই।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সাফ জানান, উচ্ছেদ-সংক্রান্ত যে কোনো রকম সিদ্ধান্তের বিরোধী তারা। যদি গাজার মানুষকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয় সেটা যুদ্ধ ঘোষণার সমান। ১৯৪৮ সালে পুনরাবৃত্তি হতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিন সরকার। অন্যদিকে, মিসর সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি না দিলেও শরণার্থীদের বোঝা বাড়াতে রাজি নয় তারা।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল গঠনের সময়ে দেশছাড়া হন বহু আরব নাগরিক। গাজায় গিয়ে আশ্রয় নেন তারা। অন্যদিকে, ১৯৬৭ সালে মিসরের সিনাই অঞ্চলটি দখল করেছিল ইসরায়েল। পরবর্তীকালে তা মিসরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে হামাসের মোকাবিলা করতে গিয়ে গাজার সাধারণ মানুষকে সিনাইতে সরিয়ে দেওয়ার যে পরিকল্পনা, তাতে ভয় বেড়েছে মিসরের। তাদের ধারণা, গাজার সমস্যাকে এবার মিসরের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে ইসরায়েল।

সর্বশেষ খবর