বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মন্ত্রীরাই বিশ্বাস করেন না নেতানিয়াহুকে

মন্ত্রীরাই বিশ্বাস করেন না নেতানিয়াহুকে

গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিভক্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিপরিষদ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ আর নেতানিয়াহুকে বিশ্বাস করেন না। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলেছে, রবিবার রাতে এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি টুইট করেন নেতানিয়াহু। তাতেই ইসরায়েলের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ফাটল বেরিয়ে আসে। নেতানিয়াহু টুইটে লিখেছেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যে রকেট হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে তাকে কখনোই সতর্কতামূলক তথ্য জানানো হয়নি। পক্ষান্তরে তিনি এর জন্য সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা প্রধানদের ঘাড়ে দোষ চাপান। কারণ হামাসের হামলার আগে তাদের কাছে এ সম্পর্কিত তথ্য ছিল। নেতানিয়াহুর এ টুইট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা ওঠে। ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতারা তার সমালোচনা করে বলেন, গাজায় যখন জটিল এক সামরিক অভিযান চলছে, তখন রাজনীতি নিয়ে খেলছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষোভ এতটাই তীব্র আকার ধারণ করে যে নিজের পোস্টটি মুছে দেন নেতানিয়াহু। ক্ষমা চেয়ে বলতে বাধ্য হন, ‘আমি ভুল বুঝেছিলাম।’

এমন সময় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হলো, যখন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী ডানপন্থি সরকার দেশে বিতর্কিত কিছু সংস্কার আনতে চেয়েছিল। ওই সংস্কারের ফলে ইসরায়েলের বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনা থেকে এটা নিশ্চিত যে ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সম্পর্কে ফাটল বাড়ছে। চলমান যুদ্ধের মধ্যে নিজের স্বার্থের চেয়ে জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ পরিচালনায় নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লন্ডনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক কর্মসূচির অ্যাসোসিয়েট ফেলো ইয়োসি মেকেলবার্গ বলেছেন, তিনি নিয়মের বাইরে ছিলেন এটা হবে বছরের সেরা বিষয়। দেশ একটি অত্যন্ত জটিল সামরিক অভিযানে। এ সময় দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজন ইসরায়েলে। সরকারে এমন একজন ব্যক্তিও নেই, যিনি নেতানিয়াহুর ওপর আস্থা রাখেন। এটাই এ মন্ত্রিপরিষদের প্রধান ইস্যু। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরপরই জরুরি যুদ্ধকালীন একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন নেতানিয়াহু। এতে সাবেক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের যুক্ত করেন। বিরোধী দলকেও পদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। নেতানিয়াহু ওই বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ার পর দ্রুততার সঙ্গে এতে প্রক্রিয়া দিয়েছিলেন বেনি গান্টজ। তিনি সেনাবাহিনী এবং আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন পাওয়ার জন্য নেতানিয়াহুর পোস্ট সরিয়ে ফেলার দাবি জানান। অন্য নেতারাও সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। নেতানিয়াহুর এক সময়ের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতা আভিগডোর লিবারম্যান বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই নেতানিয়াহুর। তিনি জিম্মিদের বিষয়ে আগ্রহী নন। তিনি আগ্রহী শুধু রাজনীতি নিয়ে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ডানিয়েল হাগারি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, আমরা এখন যুদ্ধে আছি।

সর্বশেষ খবর