শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর কী?

সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর কী?

গাজায় আট সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়ে লাখো ফিলিস্তিনির বাড়ি-ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বপ্নগুলোকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। গতকাল ছিল যুদ্ধবিরতির শেষ দিন। তার আগে খান ইউনিসে কয়েকজন ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ঘর তোলার চেষ্টা করছেন - এএফপি

কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি চলছে তার শেষ দিন ছিল গতকাল। শুক্রবার গাজার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে, যা গতকাল রাত পর্যন্ত চলার কথা। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বাড়ছে কি না তা জানা যায়নি। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের চার দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়তো ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী-আইডিএফকে বাড়িয়ে নয় দিন দেরি করাবে। তবে সেটা নির্ভর করছে হামাস কতজন জিম্মিকে মুক্তি দিতে চায় তার ওপর।

ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, জিম্মি মুক্তির এই প্রক্রিয়া শেষ হলেই, গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার যে যুদ্ধ, সেটা আবারও শুরু হবে এবং তা শেষ হতে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন লাগতে পারে। কিন্তু যদি ইসরায়েলি বাহিনী এরপর গাজার দক্ষিণে মনোযোগ দেয়, যার বেশ পরিষ্কার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, তখন পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে? ইসরায়েল শপথ নিয়েছে, হামাস যেখানেই থাকবে, তাদের ধ্বংস করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে এই গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও মোহাম্মদ দেইফ, আরও যোদ্ধাদের সঙ্গে দক্ষিণেই কোথাও আছেন এবং খুব সম্ভবত ইসরায়েলি জিম্মিদের একটা বড় অংশও তাদের সঙ্গে আছে। এখন যদি ইসরায়েল উত্তরে যেটা করেছে, সেই একই রকম অপারেশন দক্ষিণেও করতে চায়, তাহলে পশ্চিমাদের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন কি তখনো অটুট থাকবে? গাজা উপত্যকার আনুমানিক ২২ লাখ মানুষ এখন দক্ষিণের দুই-তৃতীয়াংশ অংশে এসে জমায়েত হয়েছে। তাদের অনেকেই এখন গৃহহীন ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। হামলা হলে এই মানুষগুলোর কী হবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউ) বলছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যাদের বেশির ভাগ এখন দক্ষিণে গাদাগাদি করে থাকছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন পরিস্থিতি ইতোমধ্যেই ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে কারণ হাজার হাজার লোক স্কুল, হাসপাতাল এবং তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে। এ অবস্থায় কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একটা সমাধানের কথা বলা হচ্ছে- আর সেটা হলো আল মাওয়াইসির তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরি করা। এটি হচ্ছে ভূমধ্যসাগরের পাশে একটা সংকীর্ণ কৃষি জমির এলাকা, যা মিসর সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত।

নেতানিয়াহুর সরকার জানে ৭ অক্টোবর ঘটে যাওয়া হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর পশ্চিমাদের জমা করে রাখা সহানুভূতির ওপর তারা ভরসা করতে পারে। কিন্তু ইসরায়েল এটাও জানে যে এই সহানুভূতি অন্তহীন নয়। যখন বন্দি বিনিময়ের বিরতি শেষে ইসরায়েল আবারও সামরিক অভিযান শুরু করবে তখন যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে।

 

সর্বশেষ খবর