শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আন্তর্জাতিক আহ্বানকে থোড়াই কেয়ার ইসরায়েলের

গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ

আন্তর্জাতিক আহ্বানকে থোড়াই কেয়ার ইসরায়েলের

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিন অসংখ্য শিশু নিহত হচ্ছে। গতকাল খান ইউনিসে বোমায় আহত এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে স্বজনরা -এএফপি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকুক না থাকুক গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। কোনো কিছুতেই ইসরায়েলকে থামানো যাবে না।

গাজায় চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে গতকাল বুধবার এক ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকারই সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে থেকেও অত্যন্ত যন্ত্রণাবোধ নিয়ে কথাগুলো বলছি। কোনো কিছুতেই আমাদের থামানো যাবে না। একেবারে শেষ পর্যন্ত, বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা অটল থাকব। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।’ একই কথা ব্যক্ত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনও। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকুক কিংবা না থাকুক; গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত চলমান যুদ্ধ নিয়ে সম্প্রতি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। গাজায় চলমান নির্বিচারে বোমাবর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইসরায়েলের আরও অনেকেই রয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষে ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেকেরই সমর্থন রয়েছে। কিন্তু গাজায় নির্বিচার বোমা হামলার কারণে তারা সেই সমর্থন হারাতে শুরু করেছে।’

এদিকে বাইডেন তাঁর বক্তব্যে নেতানিয়াহুর সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত কথোপকথনের দিকে ইঙ্গিত করেন, যেখানে ইসরায়েলি নেতা বলেছিলেন, ‘আপনি জার্মানিতে বোমা ফেলেছেন, আপনি পরমাণু বোমা ফেলেছেন, অনেক বেসামরিক লোক মারা গেছে।’ এর প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এসব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছিল। আমরা ৯/১১ এ যে ভুলগুলো করেছিলাম, সেই একই ভুলগুলো করবেন না।’

১৭ সাংবাদিক নিহত : ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ‘রিপোটার্স উইদাউট বর্ডারস’ (আরডব্লিউবি) এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ যুদ্ধে নিহত ১৭ সাংবাদিকের মধ্যে ১৩ জন গাজা ভূখন্ডে নিহত হয়েছেন।

গাজায় একচোখা নীতি নিয়ে সোচ্চার শতাধিক কর্মকর্তা : গাজায় যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়েছেন বিভাগের শতাধিক কর্মকর্তা। তাঁরা বিভাগের মন্ত্রী আলেহান্দ্রো মায়রকাসকে দেওয়া এক খোলাচিঠিতে এই নিন্দা জানান।

গাজায় প্রায় ১৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের বার্তায় স্বীকৃতি, সমর্থন ও সহমর্মিতার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো অবস্থান না থাকায় খোলাচিঠিতে হতাশা প্রকাশ করা হয়। ডিএইচএসের সর্বশেষ এই খোলাচিঠি গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের মধ্যে মতপার্থক্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। গাজা যুদ্ধে নিজেদের অবস্থানে ইতোমধ্যে সমালোচনার মুখে রয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

সর্বশেষ খবর