বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতের সংসদে বরখাস্তের হিড়িক

বহিষ্কৃত সাংসদদের সংখ্যা বেড়ে ১৪১

কলকাতা প্রতিনিধি

শীতকালীন অধিবেশনে ভারতের সংসদ থেকে নজিরবিহীনভাবে গত পরশু ও গতকাল মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১৪১ জন এমপিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর সংসদে অধিবেশন চলাকালীন নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে হামলা চালান দুই যুবক। বাইরে তাদের সমর্থনে তখন স্লোগান দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ ঘটনায় বিরোধী পার্লামেন্ট সদস্যরা সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ঘটনা নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করেন। অমিত শাহের ইস্তফাও দাবি করেন তারা।

এ নিয়ে হট্টগোলের জেরে গত সপ্তাহে ১৪ এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এরপর সোমবারও বিরোধীরা সরব হন এ ঘটনা নিয়ে। এ ঘটনায় পরে আরও ১২৭ এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এই ইস্যুতে ১৪১ জন সংসদ সদস্যকে শীতকালীন অধিবেশনের বাকি সময়ের জন্য বহিষ্কৃত করা হলো। এর মধ্যে ৯৫ জন লোকসভার সংসদ সদস্য, বাকি ৪৬ জন রাজ্যসভার সংসদ সদস্য।

গতকাল যে ৪৯ জন সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়, তারা সবাই লোকসভার সদস্য। এদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর, মনিশ তিওয়ারি, কার্তি চিদাম্বরম, প্রদ্যুৎ বরদলুই, এনসিপির প্রধান সুলে, সমাজবাদী পার্টির ডিম্পল যাদব, ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের ফারুক আবদুল্লাহ, তৃণমূল কংগ্রেসের মালা রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বহুজন সমাজ পার্টির দানিশ আলি, আম আদমি পার্টির সুশীল কুমার রিঙ্কু, ডিএমকের সেন্থিল কুমার প্রমুখ।

লোকসভায় ৫৪৩ সংসদ সদস্যর মধ্যে ৩০০-এরও বেশি সংসদ সদস্য হয় বিজেপি বা তার জোট শরিক দলগুলোর। বাকি সংসদ সদস্যরা বিজেপি বিরোধী দলগুলোর। কিন্তু মঙ্গলবারের এই বহিষ্কারের ঘটনায় সংসদের নিম্নকক্ষে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য সংখ্যা নেমে এসেছে ১০০ জনে। আবার বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন অন্ধপ্রদেশের ক্ষমতাসীন দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং ওড়িশার ক্ষমতাসীন দল বিজু জনতা দলের। যদিও সংসদে বিল পাস থেকে প্রতিটি ইস্যুতেই বিজেপিকেই বরাবর সমর্থন দিয়ে এসেছে এই দলগুলো। রাজ্যসভাতেও চিত্রটা এ রকম। দেশটির ক্ষমতাসীন দলকে প্রশ্ন করার জন্য সংসদের উচ্চকক্ষে বড়জোর ১০০ জনের মতো বিরোধী সংসদ সদস্য রয়েছেন।

এদিনের এই বহিষ্কার নিয়ে কংগ্রেস সংসদ সদস্য শশী থারুরের বক্তব্য ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো।’ তিনি বলেন ‘এটা স্পষ্ট যে, বিজেপি একটি বিরোধী-মুক্ত লোকসভা চায় এবং তারা রাজ্যসভায়ও একই রকম কিছু করবে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে দুর্ভাগ্যবশতভাবে, আমাদের ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য শোকগ্রন্থ লেখা শুরু করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর