বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল

বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে না দক্ষিণ গাজার বাস্তুচ্যুত শিশুরা

গাজায় একটি নতুন সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে রাজি ইসরায়েল। তবে এজন্য হামাসের হাতে আটক আরও জিম্মির মুক্তির বিষয়ে নিশ্চয়তা পেতে হবে। এ কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ। মঙ্গলবার বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকের সামনে দেওয়া বক্তব্যে আইজ্যাক হেরজগ বলেন, জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল আরেকটি মানবিক বিরতি ও অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। এদিকে ওই দিনই গাজায় যুদ্ধবিরতিবিষয়ক একটি প্রস্তাবের কাঠামো নিয়ে মতানৈক্যের জেরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়নি। যদিও গতকাল সেই ভোট হওয়ার কথা।

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার দুই মাস পেরিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গাজায় হামলা বন্ধ ও গাজাবাসীর জন্য আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ দিতে ইসরায়েলের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে। এর আগে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে মধ্যস্থতা করেছিল কাতার ও মিসর। নভেম্বরের শেষের দিকে সপ্তাহজুড়ে চলা বিরতিতে হামাস ৮৬ নারী ও শিশুকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ২৪০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পায়। হামাসের পক্ষ থেকে ২৪ বিদেশি জিম্মিকেও মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর গত সোমবার পোল্যান্ডে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালক ডেভিড বার্নিয়া ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র প্রধান বিল বার্নসের সঙ্গে বৈঠক করেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি। বৈঠকে তাঁরা বন্দি-জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে নতুন একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। এ কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র রয়টার্সকে জানান, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক সম্ভাব্য প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা। হামাসের পক্ষ থেকে গতকাল এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা চলমান থাকলে বন্দিবিনিময়ের কোনো আলোচনা হবে না। তবে আগ্রাসনের অবসান এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণসহায়তা দিতে সীমান্ত ক্রসিং উন্মুক্ত রাখার যে কোনো উদ্যোগ স্বাগত জানানো হবে। পানির অভাবে মারা যেতে পারে বিপুলসংখ্যক শিশু : যুদ্ধবিধ্বস্ত প্যালেস্টাইনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে পানীয় জলের অভাবে মারা যেতে পারে বিপুলসংখ্যক শিশু। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল এ আশঙ্কা করেছেন। তিনি বলেছেন, বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন, দক্ষিণ গাজার বাস্তুচ্যুত শিশুরা তা পাচ্ছে না। ফলে বঞ্চিত এসব শিশুর মধ্যে অনেকেই সামনের দিনগুলোয় মারা যাবে। রোগে ভুগবে। অনিরাপদ উৎস থেকে এসব শিশু এবং তাদের পরিবার পানি সংগ্রহ করে নিয়ে ব্যবহার করছে। এ পানি উচ্চমাত্রায় লবণাক্ত ও দূষিত। তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের শুরুতে হাজার হাজার মানুষ ছুটে গেছে দক্ষিণের রাফা অঞ্চলে। এর অর্ধেকই শিশু। তাদের জন্য পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা চরম মাত্রায় সংকটজনক অবস্থায়। সেখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা ডায়রিয়ায় গড়ে প্রতি মাসে যে পরিমাণ মারা যায় পানি সংকটের কারণে সেই গড় এখন ২০ গুণ বেশি। গাজায় এক দিনে মৃত ১০০ :? ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজায় এক দিনে মারা গেছে ১০০ ফিলিস্তিনি। প্যালেস্টাইনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। মঙ্গলবার এ হামলা হয়।

৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১৯ হাজার ৬৬৭ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে।

সর্বশেষ খবর