শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
গাজা ইসরায়েল সংঘাত

অবশেষে যুদ্ধ থামাতে ইতিবাচক যুক্তরাষ্ট্র

প্রস্তাবটিতে ‘বিরতি’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তাই শব্দটি বাদ দিয়ে এর পরিবর্তে ‘শত্রুতা বন্ধ’ লেখা হয়

৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর অবশেষে জাতিসংঘে যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি ও গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোবিষয়ক প্রস্তাবে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এর আগে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা বাড়ানোবিষয়ক প্রস্তাবে সমর্থন করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, প্রস্তাবটি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য মিসর যে ভূমিকা পালন করছে সেটিকে সমর্থন করবে।

এর আগে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও মানবিক সহায়তা বাড়ানোবিষয়ক প্রস্তাবে সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবটিতে ‘বিরতি’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তাই ‘বিরতি’ শব্দটি বাদ দিয়ে এর পরিবর্তে ‘শত্রুতা বন্ধের’ বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এর পরও আরও কিছু বিষয়ে সম্মত ছিল না যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে প্রস্তাবটির ওপর নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল।

৮ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাজ্য। তা ছাড়া বাকি ১৩ সদস্যসহ বিশ্বের বহু দেশ প্রস্তাবটিতে সমর্থন দিয়েছিল। এদিকে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, অব্যাহত সংঘাতের কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি প্রতিদিন বাড়ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, উত্তর গাজায় সব হাসপাতালেই চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে এবং উপত্যকাটির সম্পূর্ণ চিকিৎসাব্যবস্থা তলানিতে ঠেকেছে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবটিতে যে পরিবর্তন এনেছে : আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবটির বেশ কিছু বিষয়ে সংশোধন আনে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘আমরা এ প্রস্তাবে ভোট করতে প্রস্তুত। আর এটি এমন প্রস্তাব যা অভাবীদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করবে।’ মূল প্রস্তাবটিতে ‘শত্রুতা বন্ধের’ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। এর পরিবর্তে গাজায় ‘নিরাপদ ও অবাধ মানবিক সহায়তা এবং দীর্ঘমেয়াদে শত্রুতা বন্ধের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে শত্রুতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র খসড়া প্রস্তাবের সংশোধনে যুদ্ধবিরতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো বাদ দেয়। এর পরিবর্তে দেশটি অবাধ ও নিরাপদ মানবিক সহায়তার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের বিষয়টি উল্লেখ করে। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে শত্রুতা বন্ধের জন্য শর্তাবলি নির্ধারণেরও আহ্বান জানায়। মূল প্রস্তাবে জাতিসংঘের সহায়তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের বিষয়ে বলা হয়েছিল, যুদ্ধের পক্ষপাতী নয় এমন দেশগুলো থেকে স্থল, সমুদ্র ও আকাশ পথের মাধ্যমে গাজায় যে মানবিক সহায়তা সরবরাহ করা হবে সেগুলো জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ করবে। মূল প্রস্তাবে জল, স্থল ও আকাশ পথে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য গাজায় প্রবেশের সব রাস্তা খুলে দিতে হামাস ও ইসরায়েলের প্রতি দাবি জানানো হয়।

সর্বশেষ খবর