বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

১০ হাজার টনেরও বেশি যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

১০ হাজার টনেরও বেশি যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজার টনেরও বেশি যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সরবরাহ করেছে ২৪৪টি কার্গো বিমান ও ২০টি জাহাজ।

এসব তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সম্প্রচার মাধ্যম চ্যানেল ১২। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অতিরিক্ত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও ২.৮ বিলিয়ন মূল্যের যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ইসরায়েলের পার্লামেন্টের (নেসেট) সদস্য টালি গোতলিভ সোমবার এক বৈঠকে দাবি করেন, দক্ষিণ গাজায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে গোলা হামলা ‘গত তিন সপ্তাহে নাটকীয়ভাবে কমেছে।’ তার এই মন্তব্যের পরই যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের এ খবর এলো। গত ৬ ডিসেম্বর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আইডিএফের জন্য সামরিক সরঞ্জাম বোঝাই ২০০তম মার্কিন কার্গো বিমান ইসরায়েলে পৌঁছানোর কথা জানিয়েছিল। এ ছাড়াও প্রতিবেদনটিতে ১০ হাজার টন সামরিক সরঞ্জামের বিষয়ে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলকে যেসব যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সাঁজোয়া যান, অস্ত্র, ব্যক্তিগত নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ, চিকিৎসা সামগ্রী’ ইত্যাদি।

ছয় দেশ থেকে হামলা হচ্ছে ইসরায়েলে : চলমান গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ছয় দেশ থেকে ইসরায়েলে হামলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট। তবে এসব হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। নেসেটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটির এক বৈঠকে গ্যালান্ট বলেন, কয়েকটি ফ্রন্টে আমরা যুদ্ধ করছি। সাত স্থান থেকে ইসরায়েলে হামলা চালানো হচ্ছে। সেগুলো হলো, গাজা, লেবানন, সিরিয়া, পশ্চিম তীর, ইরাক, ইয়েমেন ও ইরান। তিনি বলেন, এসব হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া হচ্ছে, যারা আমাদের লক্ষ্য করে হামলা চালাবে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। গ্যালান্ট বলেন, গাজায় যুদ্ধ হবে দীর্ঘমেয়াদি ও কঠিন।

রেড ক্রিসেন্টের সদর দফতরে ইসরায়েলের হামলা : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পশ্চিমাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে দ্য প্যালেস্টিনিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই এলাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ মনে করা হলেও ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য থেকে বাদ পড়েনি। খবর আল জাজিরার। রেড ক্রিসেন্টের মূল ভবনের ওপরের ফ্লোরে হামলা চালানো হয়। এতে পুরো ভবন এবং এর আশপাশে স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি ওই ভবনকে নিরাপদ ভেবে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। এ ছাড়া সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে পালিয়ে আসা লোকজনও ওই ভবনে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি সেখানে আশ্রয় নেওয়া অধিকাংশ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিই খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চল থেকে এসেছে। এদিকে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, সংস্থাটির ওপরের ফ্লোরে ইসরায়েলি বাহিনীর কামানের গোলার আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত : গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২৫০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৫ শতাধিক ফিলিস্তিনি। এ হামলায় আল-মাগাজি নামক শরণার্থী শিবিরেই নিহত হয়েছেন শতাধিক ফিলিস্তিনি। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা  উপত্যকায় হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এতে ২৫০    ফিলিস্তিনি প্রাণ হারায়।

এ হামলায় আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরের সাতটি পরিবারের সবাই মারা গেছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান আরও বাড়িয়েছে তারা। তবে এই অভিযানকে দীর্ঘায়িত ও কঠিন বলে স্বীকার করেছে তারা। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল, আল-জাজিরা

সর্বশেষ খবর