শিরোনাম
বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

চাপে পড়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের

সাড়ে তিন মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার ইসরায়েলের পার্লামেন্টে হামলা চালিয়েছেন তাদের স্বজনরা। ওই দিনেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই অহমিকা থেকে সরে এসেছেন নেতানিয়াহু। এবার মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার এবং মিসরের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গাজায় দুই মাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রেখেছে ইসরায়েল। দেশটির পার্লামেন্ট (নেসেট) অধিবেশনে ঢুকে জিম্মির স্বজনদের হামলার পর এ খবর সামনে এলো। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। জানা গেছে, দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে নারী-শিশু, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ও গুরুতর অসুস্থ জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে ইসরায়েল। তারপরের ধাপে সব নারী সেনা ও ৬০ বছরের চেয়ে কম বয়সী বেসামরিক পুরুষ, পুরুষ সেনা ও নিহত জিম্মিদের লাশ হস্তান্তর করতে হবে।

টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, ইসরায়েল ১৩৬ জিম্মির পর্যায়ক্রমে মুক্তি চায়। জিম্মিদের মধ্যে যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন, সবার আগে তাদের মুক্তি চায় ইসরায়েল। বিনিময়ে হামাসের বিরুদ্ধে দুই মাসের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে তারা। পাশাপাশি গাজার প্রধান শহরগুলোয় ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি হ্রাস করা হবে এবং যুদ্ধ শুরুর পর উপত্যকার যেসব ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়েছে তাদের ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে, এ প্রস্তাবে যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে হামাসের দাবির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বর্তমানে দেশটি হামাসের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

তবে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কতজনকে মুক্তি দেওয়া হবে সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।

এক দিনে সর্বোচ্চ সেনা মৃত্যু দেখল ইসরায়েল : গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ২৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসের দখল নিতে গত সপ্তাহ থেকে সেখানে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী, সঙ্গে আকাশ হামলা তো চলছেই।

গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়াল অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি বলেন, মধ্য গাজার দুটি ভবন উড়িয়ে দিতে ইসরায়েলি সেনা সদস্যরা বিস্ফোরক প্রস্তুত করছিলেন। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি ট্যাংকের কাছে রকেট-চালিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

একসঙ্গে গ্রেনেড আর বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে ভবন ধসে পড়ে। এতে ভবনের ভিতরে থাকা সেনা সদস্যরাও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েন। সেনাদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ইসরায়েলকে নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। তাদের গাজায় অভিযান সাময়িক স্থগিত, এমনকি বন্ধও করতে হতে পারে।

এর আগের ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৪৯০ ফিলিস্তিন এ যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক নিহতের হিসেব হারিয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর