শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার রায় আজ

আইসিজে গণহত্যার অপরাধের জন্য ব্যক্তির বিচার করতে পারে না। তবে এর মতামত জাতিসংঘ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে

গাজায় বর্বর হামলা ও গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) করা মামলার রায় আজ। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কয়েক দফা শুনানির পর বিষয়টি নিয়ে আজ অস্থায়ী আদেশ বা রায় দেবেন আইসিজে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আইসিজের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ গাজা উপত্যকায় গণহত্যার অপরাধ ও এর প্রতিরোধ এবং শাস্তি-সংক্রান্ত কনভেনশনের প্রয়োগের বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় (দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইসরায়েল) দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয় অস্থায়ী আদেশ দেবেন আইসিজে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) মতো আইসিজে গণহত্যার অপরাধের জন্য ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে না। তবে এর মতামত জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে। মামলায় শুনানি শুরু হয় ১১ জানুয়ারি। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ অভিযোগকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, দক্ষিণ আফ্রিকা ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের’ আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশটির গণহত্যার দাবির ‘বাস্তব ও আইনগত ভিত্তি’ উভয়ই নেই বলে মন্তব্য করেছে দেশটি। অন্যদিকে আইসিজেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে ‘আসন্ন অপূরণীয় ক্ষতির হাত থেকে’ রক্ষা করার জন্য ‘অস্থায়ী ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। ইসরায়েল ১৯৪৮ সালে গণহত্যার বিরুদ্ধে যে কনভেনশন হয়েছে সেটির স্বাক্ষরকারী দেশ।

এতে গণহত্যাকে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলোকে এটি প্রতিরোধে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে। আইসিজে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এটি অবস্থিত। এর রায়গুলো তাত্ত্বিকভাবে আদালতের পক্ষগুলোর জন্য আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক; যার সদস্য হিসেবে রয়েছে ইসরায়েল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে আদালত এটি পালন করতে দেশগুলোকে বাধ্য করতে পারে না।

২০২২ সালে আদালতটির পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রতি ইউক্রেনে অতিসত্বর সামরিক কার্যক্রম বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তোয়াক্কা করেনি মস্কো।

দক্ষিণ আফ্রিকার হাই কোর্টের আইনজীবী টেম্বেকা এনগকুকাইতোবি আইসিজের আদালতে বলেন ‘সামরিক হামলা চালানোর ধরন দেখেই ইসরায়েলের ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে গাজাকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রটির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।’

যদিও গাজায় সামরিক হামলাকে প্রথম থেকেই যুক্তিযুক্ত বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। তেলআবিবের দাবি, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে এ আক্রমণ করছে দেশটি। এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনমন্ত্রী রোনান্ড ল্যামোলা বলেন, ‘কোনো আক্রমণই জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘনের ন্যায্যতা দিতে পারে না বা রক্ষা করতে পারে না।’

নেতানিয়াহুর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ কাতার : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী কাতারের সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেই সমালোচনায় ক্ষুব্ধ কাতার। মধ্যস্থতাকারী কাতারের ভূমিকাকে সমালোচনা করায় নেতানিয়াহুকে তিরস্কার করেছে দেশটি। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম চ্যানেল টুয়েলভের এক খবরে বলা হয়, হামাসকে অর্থায়নের জন্য কাতারকে দায়ী করেছেন নেতানিয়াহু। জিম্মিদের পরিবারের উদ্দেশে নেতানিয়াহুর দেওয়া বক্তব্যটির অডিও প্রকাশ করেছে চ্যানেল টুয়েলভ। এতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাকে কখনো কাতারকে ধন্যবাদ দিতে শুনবেন না। তারা জাতিসংঘ কিংবা রেডক্রস থেকে আলাদা কিছু নয়। এমনকি তারা আরও বেশি সমস্যাপূর্ণ। তাদের প্রতি আমার কোনো টান নেই।’ নভেম্বরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যকার এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর একটি কাতার। যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরও এতে মধ্যস্থতা করেছিল। ওই চুক্তির আওতায় ১০৫ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছিলেন।

 

সর্বশেষ খবর