বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

হামাসের ১৩৫ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব

তিনটি পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে

চারপাশ থেকে চাপ বাড়ছে। যে ভাবেই হোক গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হোক। অবশেষে গাজায় সাড়ে চার মাসের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে হামাস। কয়েকদিন ধরে আলোচনার পর এ প্রস্তাব গাজার স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামরত সংগঠন হামাসের। ওই প্রস্তাব নিয়ে গতকালই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা।

গত সপ্তাহে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি প্রস্তাব হামাসের নেতাদের কাছে পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাব হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে তখন হামাসের শীর্ষ এক নেতা জানিয়েছিলেন, তারা প্রস্তাবটি মূল্যায়ন করে দেখছেন। ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেই এবার নিজেদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সামনে আনল হামাস। হামাসের যুদ্ধবিরতির পাল্টা প্রস্তাবের বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে ইসরায়েল বার বার বলেছে, গাজায় হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। হামাস যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছে সেটা দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হামাসের ওই প্রস্তাবে তিনটি পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি পর্যায় ৪৫ দিনের হবে। গাজায় যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, হামাস যে পাল্টা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে সেখানে শুরুতেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়নি। তবে যুদ্ধবিরতির মধ্যে যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে আলোচনা করতে হবে এবং জিম্মিদের শেষ দলটি মুক্তি পাওয়ার আগে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে হবে।

হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যা যা আছে : রয়টার্সের দেখা নথি অনুযায়ী, প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির প্রথম ৪৫ দিনে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসের হাতে বন্দি সব ইসরায়েলি নারী, ১৯ বছরের কম বয়সের পুরুষ, বয়স্ক এবং অসুস্থ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এ ছাড়া চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ইসরায়েলকে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না উভয়পক্ষ ‘পারস্পরিক সামরিক অভিযান শেষ করতে এবং সম্পূর্ণ শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলোর ওপর পরোক্ষ আলোচনার সমাপ্ত না করবে’ ততক্ষণ পর্যন্ত প্রস্তাবিত চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায় আরম্ভ হবে না। দ্বিতীয় পর্যায়ে ইসরায়েলের বাকি সব পুরুষ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং পুরো গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলা আছে। মৃতদেহ এবং অন্যান্য কিছু প্রস্তাবিত চুক্তির তৃতীয় পর্যায়ে বিনিময় করা হবে। চুক্তিতে গাজায় খাদ্য এবং অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা বৃদ্ধি কথা বলা হয়েছে।

৩১ ইসরায়েলি জিম্মির মৃত্যু : ইসরায়েলের প্রশাসন বলেছে, তারা বিষয়টি ওই জিম্মিদের পরিবারকে জানিয়েছে। বাকি পণবন্দিদের কথা এখনো জানা যায়নি। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে এসে বহু মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস। তার মধ্যে কিছু ব্যক্তিকে ছাড়লেও এখনো শতাধিক হামাসের হাতে বন্দি। কীভাবে তাদের মুক্ত করা যায়, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা চলছে। তারই মধ্যে ইসরায়েল জানিয়ে দিল, ৩১ জন জিম্মির মৃত্যু হয়েছে। ওই বন্দিদের পরিবারকে এ খবর পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের বক্তব্য, এখনো ১৩৬ জন পণবন্দি গাজায় আটক। এর মধ্যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ইসরায়েল জানিয়েছিল, ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের ধারণা। যদিও এ বিষয়ে হামাস কোনো তথ্য দেয়নি।

সর্বশেষ খবর