শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান নেতানিয়াহুর

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান নেতানিয়াহুর

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে হামাসের দেওয়া প্রস্তাবে আশার আলো দেখেছিল বিশ্ব। তবে গতকাল সেই আলো নিভে গেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেছেন কয়েক মাসের মধ্যে গাজায় ‘পূর্ণ বিজয়’ আসতে যাচ্ছে।

ইসরায়েল সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাবে হামাস বেশ কয়েকটি দাবিসহ সাড়ে চার মাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় নেতানিয়াহু হামাসের প্রস্তাব ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে বর্ণনা করেন। হামাসের প্রস্তাবকে ‘উদ্ভট’ আখ্যায়িত করে নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনি এ গোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনা ‘এগোচ্ছে না’। সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পূর্ণ ও চূড়ান্ত বিজয় ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। গাজায় যদি হামাস টিকে থাকে, তাহলে পরবর্তী নির্বিচার হত্যাকাণ্ড স্রেফ সময়ের ব্যাপার।’ হামাসের পাল্টা প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া দেখানো প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু যা বলেছেন, তা সরাসরি তিরস্কার। হামাসের শর্তে যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য মনে করছেন।

হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, নেতানিয়াহুর মন্তব্য ‘এক ধরনের রাজনৈতিক বাহাদুরি’। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী যে এ অঞ্চলে সংঘাত চালিয়ে যেতে চান, তা-ই মন্তব্যের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন জুহরি। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো একটি চুক্তিতে পৌঁছতে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এদিকে মিসরীয় এক সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার কায়রোয় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলো নিয়ে নতুন পর্বের আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি জানান, একটি সর্বসম্মত সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় নমনীয়তা দেখাতে মিসর সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যস্থতাকারী কাতার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের দেওয়া জবাবকে ‘ইতিবাচক’ বলেছিল, কিন্তু নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

হামাসের ওই প্রস্তাবে তিনটি পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি পর্যায় ৪৫ দিনের হবে। যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাবে হামাস বলেছে, ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের বিনিময়ে তারা ইসরায়েল থেকে ৭ অক্টোবর ধরে নিয়ে আসা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে হবে, ইসরায়েলি বাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং উভয় পক্ষ মৃতদেহ এবং বাকি অন্যান্য কিছু বিনিময় করবে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক ও নজিরবিহীন হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল ওই দিনই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে। তার পর থেকে চার মাস ধরে তাদের অবিরাম হামলায় গাজায় ২৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার।

সর্বশেষ খবর