বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ছয় মাসের রসদ নিয়ে দিল্লির পথে কৃষকরা

পথে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস

কলকাতা প্রতিনিধি

দিল্লির দিকে অগ্রসর হচ্ছে কয়েক হাজার কৃষক। তারা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার জন্য তৈরি। তবে হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের কৃষকরা এবার আঁটঘাঁট বেঁধেই তৈরি হয়ে আসছে আন্দোলনের জন্য। তিনটি মূল দাবি- এমএসপি গ্যারান্টির জন্য আইন প্রণয়ন, কৃষি ঋণ মওকুফ ও স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন। এসব দাবিতে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচিকে ঘিরে রীতিমতো উত্তপ্ত হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের সীমান্ত শম্ভু। সেখানে কৃষকদের ওপর টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়েছে। কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের অংশ হিসেবে প্রতিটি রাজ্য থেকে কৃষকদের দিল্লিতে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও দিল্লির সীমানায় একাধিক ব্যারিকেড তৈরি করেছে দিল্লি পুলিশ। কৃষকদের আটকে রাখতে ইতোমধ্যেই সিমেন্টের কংক্রিটও তৈরি করা হয়েছে। যদিও পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সীমানা এলাকায় সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষকরা।

গতকাল সকালের দিকে বিশাল মিছিল করে পাঞ্জাব থেকে দিল্লির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে কৃষকরা। যদিও পাঞ্জাব পুলিশের তরফ থেকে বিক্ষোভকারীদের হরিয়ানার আম্বালার কাছে রাজপুরা বাইপাস অতিক্রম করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শম্ভু এলাকায় এসে বিক্ষোভকারীরা তাদের ট্রাক্টর দিয়ে সিমেন্টের ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। এরপরই বিক্ষোভকারী কৃষককে লক্ষ্য করে ড্রোন থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের হটাতে জল কামানও ব্যবহার করতে হয় হরিয়ানা রাজ্য পুলিশকে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের ওপর আক্রমণের চেষ্টার অভিযোগে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।

সোমবার রাতে চণ্ডীগড়ে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলোর সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ওই বৈঠকে কোনো সমাধান সূত্র না মেলায় নিজেদের অবস্থানেই অনড় থাকেন কৃষকরা। প্রায় ২০০ কৃষক সংগঠন ‘দিল্লি চলো’ সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও সরকারের দাবি ছিল অধিকাংশ ইস্যুতেই ঐক্যমতে পৌঁছানো গেছে এবং অন্য বকেয়া ইসুগুলো সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক গতকাল সকালে পাঞ্জাবের সাংরুর থেকে হরিয়ানা হয়ে বিক্ষোভকারী কৃষকের মিছিল দিল্লির দিকে এগোতে থাকলেই প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়।

কৃষকদের এ অভিযানকে ব্যর্থ করতে দিল্লির সঙ্গে থাকা পাঞ্জাব ও হরিয়ানার দুই সীমান্তে ধাতব বেড়া, বোল্ডার ও কংক্রিটের দেওয়াল তুলে ঘিরে ফেলা হয়েছে। একাধিক স্তরে ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে যাতে হরিয়ানা, পাঞ্জাব বা উত্তর প্রদেশ সীমান্ত দিয়ে কোনো কৃষক দিল্লিতে ঢুকতে না পারেন। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে গাজীপুর সীমান্তে। আগামী এক মাসের জন্য দিল্লিতে যে কোনো সমাবেশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

তবে প্রবল বিরোধিতার মধ্যেও নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল কৃষকরা। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে অন্তত ছয় মাস ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার মতো রসদ নিয়ে তারা দিল্লির দিকে রওনা দিয়েছেন। কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধার জানিয়েছেন পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তের শম্ভু এলাকায় প্রায় ১০ হাজার কৃষক সমবেত হয়েছেন। কৃষক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দিল্লি ও নয়ডার সঙ্গে সংযোগকারী গাজীপুর ও চিল্লা সীমান্তে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর