রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নাভালনির মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ

নাভালনির মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ

রাশিয়ার কারাগারে বন্দি পুতিনবিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির মৃত্যুতে বিক্ষোভে উত্তাল গোটা বিশ্ব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত রুশ দূতাবাসের সামনে শুক্রবার রাত থেকেই অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীর। গতকাল বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত রুশ দূতাবাসের সামনে নাভালনির প্রতিকৃতিতে ফুল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিক্ষোভকারীরা। বার্লিনে বিক্ষোভে অংশ নেন অন্তত ৬০০ মানুষ। এদের বেশিরভাগই রাশিয়ান অভিবাসী। এ সময় তারা পুতিন বিরোধী স্লোগান দেন। বিক্ষোভ হয়েছে রোম, আমস্টারডাম, বার্সেলোনা, জেনেভা, প্যারিস এবং হেগেও রুশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়। এ ছাড়া রাশিয়ায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের বাইরেও বিক্ষোভ হয়। রাশিয়ার লন্ডন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন অন্তত ১০০ মানুষ। এ সময় পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন তারা। লিসবন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভকারীরা মৌন মিছিল করেন। নাভালনিকে স্বাধীনতা ও আশার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন তারা। নিউইয়র্ক শহরেও বিক্ষোভ করেন অনেক মানুষ। রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা পুতিনবিরোধী স্লোগান দেয়। এ সময় তারা পুতিনকে খুনি বলেও উল্লেখ করে। এ সময় অন্তত ১০০ জনকে আটক করে পুলিশ। নাভালনির মৃত্যুকে ঘিরে আগেই জনগণকে সমাবেশ না করতে সতর্ক করেছিল পুলিশ। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানায় যুক্তরাজ্য। পুতিনের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি ২০২১ সাল থেকে রাশিয়ার কারাগারে আটক ছিলেন। প্যারোল লঙ্ঘন, জালিয়াতি ও আদালত অবমাননার দায়ে তখন তাকে নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত আগস্টে, এক চরমপন্থি সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও অর্থায়নের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন তিনি।

নাভালনির মৃত্যুর জন্য দায়ী পুতিন : রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির মৃত্যুর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরাসরি দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, নাভালনির মৃত্যুর খবর তাকে বিস্মিত করেনি, তবে এতে তিনি ক্ষুব্ধ। রাশিয়ার কারাগারে নাভালনি মারা গেছেন বলে শুক্রবার রুশ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করার পরে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘আমরা ঠিক কী ঘটেছে তা জানি না। তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, নাভালনির মৃত্যু পুতিন ও তার গুণ্ডারা যা করেছিল তারই ফল ছিল।’ রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি গত এক দশকে রাশিয়ায় বিরোধী নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন। রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের একটি কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল তাকে। শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘হাঁটাহাঁটি করার পর নাভালনি অসুস্থ বোধ করেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার চিকিৎসার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল, কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।’ বাইডেন বলেন, ‘রুশ কর্মকর্তরা তাদের নিজস্ব গল্প বলবে। কিন্তু এ ব্যাপারে ভুল করার কোনো অবকাশ নেই নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিন দায়ী।’ পুতিনের সরকারের দুর্নীতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সাহসীভাবে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়াত নাভালনির প্রতি শ্রদ্ধা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাইডেন জানান, তিনি রাশিয়াকে শাস্তি দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপের ‘বিবেচনা’ করছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বিশ্লেষকদের মতে, নাভালনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিতে পারে।

সর্বশেষ খবর