সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নাভালনির লাশ ফেরত পায়নি পরিবার

নাভালনির লাশ ফেরত পায়নি পরিবার

রোমানিয়ার বুখারেস্টে নাভালনির স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা -এএফপি

অ্যালেক্সি নাভালনির দেহ ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা! রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির যাকে প্রধান শত্রু ও সমালোচক মনে করা হয় তার মৃত্যুর তিন দিন পার হলেও দেহ এখনো পায়নি তার পরিবার। নাভালনির মা জানিয়েছেন, তাদের বলা হয়েছে ৪৭ বছরের পুতিন-সমালোচকের দেহ ততক্ষণ আত্মীয়দের দেওয়া হবে না, যতক্ষণ না তার মৃত্যু সম্পর্কিত তদন্ত শেষ হচ্ছে। আবার এমনও শোনা যাচ্ছে, দেহ নাকি মর্গে নেই! আর এর পর থেকেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক।  নাভালনির একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিরা ইয়ারমিশ বলেছেন, আর্কটিক কারাগারে মৃত্যুর দুই দিন পরেও ছেলের লাশ উদ্ধার করতে পারেননি মা লিউডমিলা নাভালনায়া। তিনি বলেন, নাভালনির মাকে বলা হয়েছিল যে, ময়নাতদন্ত শেষ হলেই লাশ হস্তান্তর করা হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর কারাগার হিসেবে পরিচিত আর্কটিক পেনাল কলোনিগুলোর একটিতে বন্দি থাকা অবস্থায় গত শুক্রবার তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়। সেদিন হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে নাভালনি মারা যান বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এএফপির মতে, নাভালনির সমর্থকরা রাশিয়ান কর্তৃপক্ষকে ‘হত্যাকারী’ বলে অভিযুক্ত করেছে, তাদের দাবি সে কারণেই নাভালনির দেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে না।  পশ্চিমা দেশগুলোও ৪৭ বছর বয়সী ওই নেতার আকস্মিক মৃত্যুর জন্য রুশ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে। প্রকৃত ঘটনা ‘জরুরিভিত্তিতে স্পষ্ট’ করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সাহস প্রদর্শনের জন্য নাভালনিকে জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ। তবে রুশ সরকার অবশ্য পশ্চিমের এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। নাভালনি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পশ্চিমাদের মূল্যায়ন ‘পক্ষপাতমূলক এবং অবাস্তব’ বলে মন্তব্য করে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত অ্যালেক্সি নাভালনি। সরকারের দুর্নীতি প্রকাশ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে তার নাম উঠে আসে। তিনি পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া দলকে উল্লেখ করেছিলেন ‘অসৎ ও চোরদের দল’ বলে। এ জন্য কয়েকবার তাকে জেলে যেতে হয়েছে। পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া সংসদীয় নির্বাচনে ভোট কারচুপি করেছে বলে প্রতিবাদ করার পর তাকে ২০১১ সালে ১৫ দিনের জন্য গ্রেফতার করা হয়। তবে নাভালনিকে এর আগে ২০২০ সালে সার্বিয়া যাওয়ার পথে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। পরে জার্মানির চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ করে তোলেন। পাঁচ মাস জার্মানিতে কাটিয়ে ২০২১ সালে জানুয়ারিতে মস্কো ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে আটক করা হয়।

নাভালনি তাকে হত্যাচেষ্টার জন্য রুশ কর্তৃপক্ষকে সবসময় দায়ী করে এলেও ক্রেমলিন বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।

সর্বশেষ খবর