সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সাগরের নিচে ১০ হাজার বছরের পুরনো রহস্যময় প্রাচীর!

সাগরের নিচে ১০ হাজার বছরের পুরনো রহস্যময় প্রাচীর!

জার্মানির বাল্টিক উপসাগরে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রাচীরের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রস্তর যুগে তৈরি করা হয়েছিল সেই প্রাচীর। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, ইউরোপে মানুষের তৈরি প্রাচীনতম নির্মাণ এটাই। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মেকলেনবার্গ উপসাগর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে একটি জায়গায় শিক্ষাসফরে যান একদল শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন বিজ্ঞানীও। তখনই একদল বিজ্ঞানী সমুদ্রের নিচে কিছু জিনিস পর্যবেক্ষণের সময় ওই প্রাচীরের হদিস পান। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওই প্রাচীর তৈরি হয়েছে ১,৬৭৩টি পাথর দিয়ে। উচ্চতা এক মিটারের কম, দৈর্ঘ্য ৯৭১ মিটার। প্রায় ৩০০ বড় বড় বোল্ডার দিয়ে তৈরি হয়েছিল সেই প্রাচীর। সেগুলোকে জুড়েছে হাজার দেড়েক ছোট পাথর। প্রাচীরটি যে পাথর দিয়ে তৈরি, সেগুলো এতটাই বড় এবং ভারী যে, তা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। যে সময়ে এ প্রাচীর তৈরি, সেই সময়ে কোনো যন্ত্র ছিল না। হাতে করে কীভাবে সেই পাথর তোলা হয়েছিল, তা নিয়ে রহস্যে বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা প্রাচীরের আকার, গঠন দেখে আরও একটি বিষয়ে নিশ্চিত যে, কোনোভাবেই এটি প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি করা হয়নি। সুনামি বা হিমবাহও এ প্রাচীর গঠন করেনি। মানুষই তৈরি করেছে এ প্রাচীর। তারা বলছেন, প্রায় ১০ হাজার বছর আগে একটি হ্রদের ধারে তৈরি করা হয়েছিল ওই প্রাচীর। গবেষকরা মনে করছেন, বলগা হরিণ শিকার করার জন্য সেই প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল। সেই প্রাচীর দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা হতো। বিশাল প্রাচীরের অদূরে ছিল অন্য একটি প্রাচীর। গবেষকরা মনে করছেন, দ্বিতীয় ওই প্রাচীর সমুদ্রের পলির নিচে চাপা পড়ে গেছে। ওই প্রাচীর টপকে বলগা হরিণ এলেই তির-ধনুক দিয়ে তাদের শিকার করা হতো। কাছেই আরও একটি প্রাচীর থাকায় তারা দৌড়ে পালাতে পারত না। গবেষকরা মনে করছেন, প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বছর আগে প্রাচীরটি সমুদ্রের নিচে ডুবে গিয়েছিল। সমুদ্রের পানি বাড়াই ছিল এর কারণ। এ প্রাচীরটি আবিষ্কারের পর গবেষকদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে অনেক কিছু। ১০ হাজার বছর আগে কীভাবে শিকার করা হতো সেই সময়ে কতটা উন্নত ছিল মানুষের চিন্তভাবনা।

সর্বশেষ খবর