শিরোনাম
বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

যেভাবে তৈরি মিসরের পিরামিড

যেভাবে তৈরি মিসরের পিরামিড

পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যের কথা ভাবলে প্রথমেই আসে মিসরের পিরামিডের নাম। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে নির্মাণ করা এ বিস্ময়কর স্থাপনার কাঠামো এবং নির্মাণশৈলীর রহস্য নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। ভিনগ্রহ থেকে আসা কোনো এলিয়েন স্থাপনাগুলো বানিয়েছিল কিংবা শস্য সংরক্ষণের জন্য ফারাওরা এগুলো তৈরি করেছিল, এমন নানা ধারণা প্রচলিত আছে পিরামিডকে ঘিরে। আসলেই কেন তৈরি করা হয়েছিল পিরামিড- তা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা।

পিরাডিম আসলে কী : পিরামিড মূলত একটি সামাধিক্ষেত্র। প্রাচীন মিসরের রাজাদের ফারাও নামে ডাকা হতো। তাদের মৃত্যুর পর সমাহিত করা হতো পিরামিড নামে সমাধিক্ষেত্রে। মিসরের প্রাচীন ইতিহাস ঘেটে জানা গেছে, প্রায় কয়েক দশক ধরে পিরামিড নির্মাণ করা হতো। আর এর নির্মাণ কাজে যুক্ত থাকতেন হাজার হাজার শ্রমিক। প্রাচীন মিসরে একটি মিথ ছিল যে যতদিন ফারাওদের দেহ রক্ষা করা যাবে, ততদিন তাদের স্বর্গসুখ হবে। পৃথিবী থেকে এ আত্মার যাত্রার নিশ্চিত করা ছিল জরুরি। এ আত্মাকে মিসরের মানুষ ‘কা’ নামে ডাকত। মিথ অনুসারে এ আত্মকাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দরকার ছিল খাবার এবং বাসস্থানের। তাই ফারাওদের লাশের সঙ্গে থাকত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। আর তার জন্য অর্থ খরচ করে পিরামিড তৈরি করা হতো বলে জানা গেছে। এ আত্মা বা ‘কা’ কেবলমাত্র পিরামিডের ভিতর বেঁচে থাকত বলে মনে করতেন মিসরের জনগণ। আর লাশগুলোকে বলা হতো মমি। ‘পিরামিড কারা বানিয়েছিল’ এ প্রশ্নের দীর্ঘ সময় ধরে প্রচলিত উত্তর ছিল ‘দাস’। ধারণা করা হতো বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষদের ধরে এনে ‘নির্দয়’ ফারাওরা দাস বানিয়ে তাদের দিয়ে পিরামিড নির্মাণ করাত। আর এ ধারণার শুরু জুডিও-খ্রিস্টান ধারণা থেকে। পরে এটি জনপ্রিয়তা পায় সিসিল বি. ডি মিলের ‘দ্য টেন কমান্ডমেন্টস’র মতো হলিউড সিনেমার হাত ধরে।

কিন্তু পিরামিডের দেয়ালে আঁকা ছবিগুলো থেকে ভিন্ন তথ্য ওঠে এসেছে। এ নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাধীনভাবে প্রকাশিত হার্ভার্ড ম্যাগাজিনে জনাথন শ’ প্রত্নতত্ত্ববিদ মার্ক লেহনারের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। ‘পিরামিড দাসরা বানিয়েছিল’ প্রচলিত এ ভুল ধারণার বিপরীতে যুক্তি তুলে ধরেছেন তিনি। মার্ক লেহনারের পিরামিড নির্মাণকারীদের বসবাসের শহর খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে লেখাটিতে পিরামিডের কারিগরদের জীবনযাপনের কয়েকটি দিক তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে তারা সেখানে যে ধরনের খাবার খেতেন তা থেকে বোঝা যায় দাস বা সাধারণ কর্মী না, তারা ছিলেন ‘দক্ষ কারিগর’। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অ্যামেরিকান প্রত্নতত্ত্ববিদ জর্জ রিনজার পিরামিডের দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি দেখতে পান, যেখানে পিরামিড নির্মাণকারীদের ‘খুফুর বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর