রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাল ছাড়তে চায় না ইউক্রেন

হাল ছাড়তে চায় না ইউক্রেন

রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করার পর দুই বছর পার হওয়া যুদ্ধের প্রথমদিকের চেয়ে ইউক্রেনকে এখন বেশ দুর্বল দেখাচ্ছে। সাধারণ ইউক্রেনীয়রা ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাও তারা হাল ছাড়তে চায় না। তারা চায় না রাশিয়া তাদের ভূখণ্ড দখল করে নিক। দেশটিতে রাশিয়ার আক্রমণের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি ছিল গতকাল।

জেলেনস্কির জন্মস্থানের এক বাসিন্দা হলেন ভ্যালারি। ৮০ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ একটি গ্রোসারি দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে তার সঙ্গে কথা হয় বিবিসির এক সাংবাদিকের। তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো রাজনীতিবিদ নই। আমরা বলতে পারি না কখন যুদ্ধ বন্ধ হবে। আমাদের লড়াই করে যেতে হবে। আমরা অন্য কোনো কিছু সহ্য করব না। মানুষ এখন খুবই ক্ষুব্ধ।’

দুই বছর আগে শুরু হওয়া এ যুদ্ধের দুই বছর পরও- লড়াই করার প্রবল মনোভাব এখনো রয়ে গেছে তাদের মধ্যে। সে সময় অজানা ভয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে স্বেচ্ছায় হাজার হাজার মানুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ওই সময় হঠাৎ করে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। তার জনপ্রিয়তা আরও বেশি বৃদ্ধি পায় যখন তিনি ইউক্রেন ছাড়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘আমার কোনো অশ্বারোহণ প্রয়োজন নেই। আমার দরকার অস্ত্র।’ অস্ত্রের যে প্রয়োজনীয়তার কথা জেলেনস্কি বলেছিলেন, সেই প্রয়োজনীয়তা এখনো শেষ হয়নি। তবে গত বছর রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনাদের চালানো পাল্টা আক্রমণ যখন ব্যর্থ হয়- তখন তার এই আবেদন গ্রহণযোগ্যতা হারায়। পশ্চিমা দেশগুলোই প্রশ্ন করা শুরু করে- ইউক্রেন কি তাদের দখলকৃত অঞ্চলগুলো পুনর্দখল করতে পারবে?

বর্তমানে ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ আটকে রেখেছে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণাধীন কংগ্রেস। কারণ তাদের মধ্যে ইউক্রেনের যুদ্ধ করার সক্ষমতা নিয়ে সংশয় আছে। আর মার্কিনিদের অস্ত্র না আসায় এখন অস্ত্র সংকটে পড়েছে ইউক্রেন। অন্যদিকে রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে ইরান ও উত্তর কোরিয়া। পুরো ইউক্রেনে যুদ্ধের যে প্রভাব পড়েছে এ থেকে বাদ যায়নি জেলেনস্কির জন্মস্থান ক্রাইভ রিহও। এখানকার পুরুষদের আশঙ্কা তাদেরও হয়তো যুদ্ধে যোগ দিতে বাধ্য করা হতে পারে। তবে তা সত্ত্বেও তারা চান না রাশিয়াকে কোনো ভূখণ্ড দিয়ে দেওয়া হোক। কারণ এ বিষয়টিকে যুদ্ধে পরাজয় হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ইউরি নামের এক ব্যক্তি কথা বলেন বিবিসির সাংবাদিকের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ‘কারও এই যুদ্ধের প্রয়োজন নেই। যুদ্ধ কিসের জন্য? অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।’ তাহলে শান্তির জন্য কি রাশিয়াকে ভূখণ্ড দিয়ে দেওয়া উচিত? এমন প্রশ্নের জবাবে এই ইউক্রেনীয় ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘অবশ্যই নয়, এই ভূখণ্ডের জন্য অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন। এগুলো রাশিয়াকে দিয়ে দেওয়ার কোনো মানে নেই।’ প্রসঙ্গত, ঠিক দুই বছর আগে ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ট্যাংক ও সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে বীরদর্পে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছিল।

এদিকে ইতালি, কানাডা এবং বেলজিয়ামসহ চার পশ্চিমা নেতা ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিন গতকাল দেশটির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কিয়েভ সফরে গেছেন। বিবিসি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর