শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

গাজায় মৃত্যু ৩০ হাজার ছাড়াল

গাজায় মৃত্যু ৩০ হাজার ছাড়াল

ইসরায়েলের বোমায় নিহত এক ফিলিস্তিনির লাশের সামনে স্বজনদের আহাজারি। গতকাল মধ্য গাজা থেকে তোলা ছবি -এএফপি

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা ভূখন্ডে     প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী   হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন এক হামলা চালায়। হামাসের যোদ্ধাদের আক্রমণে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় ও তারা ২৫৩ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের।

অক্টোবরের ওই দিন থেকেই গাজায় ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা হামাসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানায়। সবদিক থেকে গাজা অবরোধ করে ভূখন্ডটির বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে প্রায় পাঁচ মাস ধরে ইসরায়েলির বাহিনীর স্থল, আকাশ ও নৌ হামলায় ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তু।

গতকাল পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ২২৮ জন বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। পাঁচ মাস ধরে চলা অবিরাম হামলায় আহত হয়েছে আরও ৭০ হাজারের বেশি। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজা সিটির কাছে এ ঘটনায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১১২ জন নিহত ও ২৮০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল ঘটনার জন্য ত্রাণের ট্রাককে ঘিরে ভিড় করে থাকা জনতাকেই দায়ী করে বলেছে, তাদের অধিকাংশই পদদলিত হয়ে অথবা ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ত্রাণ বহরের ট্রাকগুলো বেসরকারি ঠিকাদাররা পরিচালনা করছিল আর তারা গত চার রাত ধরে এটি তত্ত্বাবধান করছিল। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজা সিটির কাছে ওই এলাকায় কয়েকশ মিটারের ব্যবধানে দুটি ঘটনা ঘটেছে। প্রথম ঘটনায় জনতা ট্রাক থেকে ত্রাণ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করার সময় বহু মানুষ পদদলিত হয়ে অথবা ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে।

আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে ত্রাণের ট্রাকগুলো চলতে শুরু করার পরপরই। ভিড় করে থাকা জনতার একটি অংশ ইসরায়েলি সেনাদের দিকে এগোতেই তারা হুমকি বোধ করে গুলি করে, এ ‘সীমিত প্রতিক্রিয়ায়’ অজ্ঞাত সংখ্যক মানুষ নিহত হয় বলে দাবি করেছেন তিনি। গাজার কর্তৃপক্ষ নিহতের যে সংখ্যা জানিয়েছে ইসরায়েলি এ কর্মকর্তা তা প্রত্যাখ্যান করলেও নিজে কোনো সংখ্যা জানায়নি। রয়টার্স জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় এক ঘটনায় সবচেয়ে বেশি বেসামরিক নিহতের ঘটনা এটি। হামাস বলেছে, এ ঘটনায় যুদ্ধবিরতি ও তাদের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে কাতারে চলা আলোচনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। গাজা সিটির কাছে ঘটা এ ঘটনা যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে জটিল করে তুলতে পারে, তিনি এমনটি মনে করছেন কি না প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমি জানি এটা হবে।’

সর্বশেষ খবর