সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলি হামলার জবাবে ইসরায়েলে ইরানের সম্ভাব্য আক্রমণের হুমকির মুখে মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ সতর্কাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র। অঞ্চলটিতে মার্কিন বাহিনী ও ঘাঁটিগুলোতেও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াশিংটনের। শুক্রবার এক মার্কিন কর্মকর্তা এমনটি জানিয়েছেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। আগামী সপ্তাহে ইরান হামলা চালাতে পারে জানিয়ে সিএনএনকে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছি।’ সোমবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের কনস্যুলেট ভবন ধ্বংস হয়। এ হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও তার ডেপুটি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজরিয়াহিমিসহ বাহিনীটির আরও পাঁচ কর্মকর্তা নিহত হন বলে এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানিয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় আঞ্চলিক প্রতিপক্ষদের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ হামলাকে তেহরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র সিরিয়ায় ইরানি স্বার্থের ওপর চালানো সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হামলাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই প্রথম সিরিয়ায় ইরানি কূটনৈতিক কম্পাউন্ডে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরান বলেছে, এর ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। বৃহস্পতিবার এক ফোনকলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের হুমকি নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ইরানের হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাবে, আলোচনায় বাইডেন এটি পরিষ্কার করেছেন বলে ওয়াশিংটন জানিয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ওই সময় থেকেই আমাদের টিমগুলো নিয়মিত ও ধারাবাহিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। ইরানের হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পুরো সমর্থন আছে।’
এদিকে সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় এমনভাবে জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান যে, তাতে ইরানের শত্রুদের অনুশোচনা করতে হবে। ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, দামেস্কে বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাত কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় কঠোর জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে তেহরান। ইরানের শত্রুরা হত্যাকাণ্ডের জন্য আফসোস করবে। সিরিয়ার রাজধানীতে সোমবারের বিমান হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান। ওই অঞ্চলে ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল হামলায় জড়িত বলে দাবি করেছে তারা। যদিও এ হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি বলেছেন, ‘ইরানের প্রতিক্রিয়া সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় নির্ভুলতা ও পরিকল্পনার সঙ্গে শত্রুদের সর্বাধিক ক্ষতিসাধনের লক্ষ্যে জানানো হবে; যাতে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে তারা।’এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্ফাহানে সমাবেশে উপস্থিত জনতা ‘ইসরায়েলকে ধ্বংস কর’ এবং ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস কর’ স্লোগান দেন। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়া হবে।