মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা

শক্তির হিসাবে কে এগিয়ে

শক্তির হিসাবে কে এগিয়ে

ফিলিস্তিনের গাজায় ছয় মাস ধরে ইসরায়েল ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ উত্তর পেল ইরান থেকে। শনিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলে ভয়ংকর হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলে ইরান যেসব অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করেছেন আলজাজিরার প্রতিরক্ষা সংবাদদাতা অ্যালেক্স গ্যাটোপলাস। তিনি বলেছেন, ইরান ইসরায়েলে ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ১১০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ড্রোনগুলো আকারে ছোট ছিল এবং ‘সস্তা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো’ তা ব্যবহার করা হয়েছে। ইরানের ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছিল বহু স্তরবিশিষ্ট। এগুলো এমনভাবে নকশা করা হয়েছিল, যাতে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিতে পারে। এর মধ্যে ইসরায়েলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটিতে অন্তত ১৫টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। তবে ইসরায়েল এর মধ্যে অধিকাংশই ধ্বংস করে দিয়েছে। ইরানের সংবাদ সংস্থা ইসনা এ সপ্তাহে একটি গ্রাফিকস প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলে পৌঁছাতে সক্ষম এমন ৯টি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। এখন পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য ফুঁসছে ইসরায়েলও। ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের মাধ্যমেই ইসরায়েলে হামলা চালাবে বলে মনে করছেন যুদ্ধ বিশারদরা। স্থলপথে আক্রমণের সম্ভাবনা কম। এখন প্রশ্ন হলো, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর মতো ক্ষমতা ইসরায়েলের আছে কি না? ইরান এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে কে এগিয়ে? ওয়ার্ল্ড ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ইরান বিশ্বের ১৪তম শক্তিশালী দেশ। সেখানে ইসরায়েল ১৭ নম্বরে রয়েছে।

নিয়মিত সৈন্য : গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার জানাচ্ছে, সৈন্য সংখ্যার হিসাবে ইসরায়েলের চেয়ে এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের নিয়মিত সেনা আছে ১১ লাখ ৮০ হাজার যেখানে ইসরায়েলের সৈন্য ৬ লাখ ৭০ হাজার।

যুদ্ধ বিমান : ইরানের মোট সামরিক বিমানের সংখ্যা ৫৫১টি আর ইসরায়েলের আছে ৬১২টি। এর মধ্যে ইরানের যুদ্ধ বিমান আছে ১৮৬টি আর ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান আছে ২৪১টি। ইরানের অ্যাটাকিং বিমান সংখ্যা ২৩টি যেখানে ইসরায়েলের আছে ৩৯টি। ইরানের পরিবহন বিমান আছে ৮৬টি ইসরায়েলের আছে ১২টি।

ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান : তথ্য অনুযায়ী, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের দিক থেকে ইসরায়েলের চাইতে এগিয়ে আছে ইরান। ইসরায়েলের ট্যাংক আছে ১ হাজার ৩৭০টি আর ইরানের ১ হাজার ৯৯৬টি। সাঁজোয়া যান আছে ইরানের ৬৫ হাজার ৭৬৫টি আর ইসরায়েলের আছে ৪৩ হাজার ৪০৩টি। এ ছাড়া আর্টিলারি সক্ষমতায় এগিয়ে ইরান যেখানে তাদের রকেট আর্টিলারি এমএলআরএসের সংখ্যা ৭৭৫টি এবং সেলফ প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৫৮০টি। অন্যদিকে ইসরায়েলের এ দিক থেকে সেফল প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৬৫০টি এবং এমএলআরএস বা রকেট আর্টিলারির সংখ্যা ১৫০টি। ট্যাংক সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে আছে ইরান।

নৌ শক্তি : নৌবাহিনীর শক্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে ইরান। দেশটির ১০১টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে যেখানে ৭টি ফ্রিগেট এবং ২১টি টহল জাহাজ আর ইসরায়েলের যুদ্ধজাহাজ সংখ্যা ৬৭টি। এর মধ্যে টহল জাহাজ আছে ৪৫টি এবং ইসরায়েলের কোনো ফ্রিগেট নেই। সাবমেরিনের দিক থেকেও ইরান শক্তিশালী। দেশটির সাবমেরিন আছে ১৯টি যেখানে ইসরায়েলের সাবমেরিন আছে ৫টি।

হেলিকপ্টার: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরানের হেলিকপ্টার আছে ১২৯টি আর ইসরায়েলের ১৪৬টি।

পারমাণবিক শক্তি : সুইডেনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শুরুতে বিশ্বের ৯টি দেশের কাছে প্রায় ১২ হাজার ৫১২টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েল। এ তালিকায় ইরানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই ছিল না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার দাবি করেছে যে, ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর