শিরোনাম
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
ইরান-ইসরায়েল হামলা, পাল্টা হামলা

এখানেই কি শেষ?

এখানেই কি শেষ?

ইসরায়েলের কাছে বিশ্বের সব নেতাদের অনুরোধ ছিল উত্তেজনা চরম পর্যায়ে না নিতে যেন ইরানে হামলা চালানো না হয়। কিন্তু সেই কথা শুনলেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় ইস্পাহান প্রদেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ফলে এই যুদ্ধের এই উত্তেজনা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনাকে ছড়িয়ে গেল।

আগে থেকেই ইরান সতর্ক করেছে। বলেছে, ইরানের মাটিতে কোনো ধরনের হামলা চালানো হলে তার পরিণতিতে ভয়াবহ ও কঠোর জবাব দেবে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনিসহ নীতিনির্ধারক সবাই জানিয়েছিলেন, আক্রান্ত হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাল্টা জবাব দেবে ইরান। এ জন্য ইরানের সেনাবাহিনী প্রস্তুত। ফলে এই হামলা-পাল্টা হামলাকে কেন্দ্র করে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পুরো আশঙ্কাকে মাথায় রেখেই বিশ্বনেতারাসহ জাতিসংঘ সতর্ক করেছে ইসরাইলকে। কিন্তু উগ্র ইসরাইল কারও কথায় কান না দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এখন আতঙ্কের বিষয়, ইরান এর কী জবাব দেয় বা কীভাবে দেয় সেটা। এরই মধ্যে হামলার খবর প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববাজারে তেল ও স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

যদিও গতকালের পাল্টা হামলার পর বিষয়টিকে পাত্তাই দিচ্ছে না ইরান। দেশটির ইস্পাহান শহরে বিস্ফোরণের ঘটনাকে বিভিন্ন সূত্র ইসরায়েলি হামলা বলে উল্লেখ করলেও ইরান সেই বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে। এটি বাইরের দেশের হামলা নয় বলে ইতোমধ্যে ইরানের গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে। এ অবস্থায় তেহরান ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পাল্টা জবাব দেবে না বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের এমন অবস্থানের পর আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা অনেকটা কেটে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কিন্তু গতকালের পরিস্থিতিকে ভঙ্গুর ও উত্তেজনাকর বলে বর্ণনা করছেন আল জাজিরার সাংবাদিক ডোরসা জব্বারি। তিনি বলছেন, সবচেয়ে উত্তেজনাকর অবস্থা বিরাজ করছে। ডোরসা জব্বারি আরও বলছেন, ইরানের মিডিয়া এই হামলাকে ছোট করে দেখছে। তারা বলছে, তিনটি ছোট আকারের উড়ন্ত অজ্ঞাত বস্তুকে স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় ইস্পাহানের আকাশে দেখা গেছে। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা শনাক্ত করে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই স্থানটি হলো ইস্পাহান প্রদেশে ইরানের একটি সামরিক বিমানঘাঁটি বরাবর। সেটা দেশটির সেনাবাহিনী ব্যবহার করে, রেভ্যুলুশনারি গার্ড ব্যবহার করে না।

ওদিকে ইসরায়েলের হারেৎজ পত্রিকা বলছে, ইস্পাহানের কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে। তবে তেহরানের কর্মকর্তারা এ খবরকে মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলেছেন, ইসফাহানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইরানে হামলার রিপোর্ট হলো ইসরায়েল ও আমেরিকান মিডিয়ার প্রচারণা ছাড়া কিছু নয়। এ ছাড়া ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল জরুরি বৈঠক তলব করেছে মর্মে যে খবর বেরিয়েছে, তাও প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। রাষ্ট্রীয় টিভি বলেছে, শহরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর বাইরে যেসব রিপোর্ট প্রকাশ হচ্ছে তা ভুয়া। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি আঞ্চলিক গোয়েন্দা সূত্র বলেছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হামলা ‘শেষ হয়েছে’। উভয় দেশ শোধ-বোধ অবস্থায় আছে।

 

বেড়ে গেল তেল ও সোনার দাম

তেল ক্রয়ের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১.৮ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৮৮ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে সোনার দাম বর্তমানে আউন্স প্রতি ২ হাজার ৪০০ ডলারে পৌঁছেছে। মূলত ইরানে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার বিষয়টি মার্কিন প্রশাসন নিশ্চিত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তেল ও সোনার দাম বাড়ল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর