সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

৬১ বিলিয়ন ডলারের বিল পাস

ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা

৬১ বিলিয়ন ডলারের বিল পাস

ধারণা করা হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে নতুন করে প্রাণ পাচ্ছে ইউক্রেন। কারণ রাশিয়াকে ঠেকাতে ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের (৬ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা প্রায়) সামরিক সহায়তা বিল যুক্তরাষ্ট্র পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে। এখন সবার নজর হবে যে, কখন এ সহায়তা পৌঁছাবে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এটি কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হবে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বহির্বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের বিষয়ে একটি ‘পরিষ্কার বার্তা’ দিলেন নিজেদের স্বার্থে পিচ পা হয় না যুক্তরাষ্ট্র। বিলটি পাসের পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার বৈশ্বিক গুরুত্ব সবসময়ই থাকবে এবং আমেরিকা যতদিন এর সুরক্ষায় সহায়তা করবে ততদিন এটি ব্যর্থ হবে না।’ তিনি বলেন, এ সহায়তা যুদ্ধের সম্প্রসারণ ঠেকাতে এবং হাজারো জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে। এদিকে রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পাল্টা প্রতিক্রিয়াতে বলেছেন, এ প্যাকেজ ‘যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ধনী বানাবে, ইউক্রেনকে আরও ধ্বংস করবে এবং ফলাফলস্বরূপ এমনকি আরও বেশি ইউক্রেনিয়ানের মৃত্যু দেখা যাবে’।

শনিবার পাস হওয়া বিলটিতে ইউক্রেনের পাশাপাশি ইসরায়েলকে ২৬ দশমিক ৪ ডলারের সামরিক সহায়তা এবং গাজায় ৯.১ বিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তার জন্য নির্দিষ্টভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে। উপরন্তু এ প্যাকেজে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্রদের জন্য, বিশেষত তাইওয়ানের জন্য ৮.১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার লক্ষ্য কমিউনিস্ট চীনের প্রভাব মোকাবিলায় তাদের ক্ষমতা বাড়ানো। শনিবার হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে মোট ৪২৩টি ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ২১০ জন ডেমোক্র্যাট ও ১০১ জন রিপাবলিকান বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং ১১২ জন রিপাবলিকান বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা প্যাকেজ নিয়ে রিপাবলিকান দলের উচ্চস্তরের মধ্যে বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করেন। এরপর থেকে উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সৈনিক। ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে।

বিলটি এখন সিনেটে যাবে এবং আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে এটি অনুমোদিত হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরের পর এটি আইনে পরিণত হবে। ওদিকে ‘ইতিহাসের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য’ পার্লামেন্টে উভয় দলের চেষ্টার প্রশংসা করেছেন বাইডেন। একই সঙ্গে তিনি দ্রুত বিলটির অনুমোদন দেওয়ার জন্য সিনেটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে ‘দ্রুত স্বাক্ষর করে দ্রুত ইউক্রেনের রণাঙ্গনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে দরকারি অস্ত্র ও উপকরণ পাঠাতে’ এটিকে আইনে পরিণত করতে পারেন।

ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল ইয়েন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, এ সহায়তা ইউক্রেনের ইউরোপীয় সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া শত বিলিয়ন ডলারের সহায়তাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে তুলবে। ‘ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে দরকারি সব ধরনের সহায়তা পাওয়ার অধিকারী,’ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন ইইউ প্রধান উরসুলা ভন দের লিয়েন এবং চার্লস মিশেল। পশ্চিমা অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল ইউক্রেনের এ সহায়তা খুবই দরকার ছিল। কারণ দেশটি যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সেই রাশিয়া গত কয়েক সপ্তাহে বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। ইউক্রেনের সৈনিকদের অস্ত্র কমে আসছে। জেলেনস্কি এবং সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস বলেছেন, আমেরিকার সহায়তা না পেলে ইউক্রেন যুদ্ধে হেরে যাবে। গত ছয় মাসে রাশিয়া আরও কিছু ভূখন্ড নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ওয়াশিংটনের শূন্যতা পূরণে অন্য পশ্চিমারা হিমশিম খাচ্ছিল।

সর্বশেষ খবর