লোকসভা ভোট শুরু হয়ে গেছে। প্রথম দফার ভোট শেষ। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করলো কলকাতা হাই কোর্ট। যে রায়ে গোটা ভারতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর ফলে ওই প্যানেলে নিয়োগ করা ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, চাকরি হারা ওই শিক্ষকদের এতোদিনের সুদ-সহ বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মানবিক ক্ষেত্র বিচার করে সোমা দাস নামে একজন চাকরি প্রার্থীকে শুধুমাত্র ওই তালিকায় রাখা হয়নি। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত।
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলা চলছিল। যার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সেই মামলা আসে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে। দীর্ঘ সওয়াল জবাব শেষে গতকাল ২০১৬ সালে বেআইনিভাবে নিয়োগের গোটা প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এসএসসিকে জানিয়েছে আদালত। ২০১৬ সালের যতজন পরীক্ষা দিয়েছিল তাদের ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন) শিট এর মূল্যায়ন করা হবে এবং সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হবে যোগ্যদের। যদিও হাইকোর্টের এই নির্দেশকে বেআইনি বলে আখ্যায়িত করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। একই সাথে চাকরি যাওয়ার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন রায়গঞ্জের চাকুলিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে মমতা বলেন, যাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, চিন্তা করবেন না, হতাশ হবেন না, কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। আমরা সকলেই আপনাদের পাশে আছি এবং যতদূর লড়াই করার আমরা লড়াই করব। মমতা বলেন ‘ওদের একজন (সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী) বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে গেল। এটা তার অর্ডার ছিল। সুপ্রিম কোর্ট এটাকে খারিজ করে দিয়ে বলেছিল নতুন ডিভিশন বেঞ্চ করে আলোচনা করা হোক। আদালতের গোটা রায়টাকেই আমরা চ্যালেঞ্জ করছি, তার কারণ ২৬০০০ চাকরি বাতিল মানে প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।