বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

২০০ দিনে গড়াল গাজা যুদ্ধ

♦ যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ নেই ♦ নিহত ৩১৮৩ ♦ আহত ৭৭৫০০

২০০ দিনে গড়াল গাজা যুদ্ধ

ইসরায়েলি হামলায় মা মারা গেছেন। স্বজনরা সেই লাশ নিয়েই হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে সেই দেহ থেকে একটি জীবিত বাচ্চা বের করেন। তাকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা-এএফপি

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ গতকাল ২০০ দিন পার করেছে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। এত প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ সত্ত্বেও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও ইসরায়েল তাতে পাত্তা দিচ্ছে না। গতকালও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটিতে তীব্র গোলাবর্ষণ করেছে। এএফপি সংবাদদাতা এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দক্ষিণ গাজায় হামাসের অবস্থানেও আঘাত করেছে।

এ ছাড়া দক্ষিণে খান ইউনিস শহরে গোলাবর্ষণ এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যখন বুরেজ শরণার্থী শিবিরের কাছে বিমান হামলা হয়েছে এবং নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে আর্টিলারি ফায়ার আঘাত হেনেছে। হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায়। এর ফলে ১ হাজার ১৭০ ইসরায়েলি নিহত হয়। প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল একটি সামরিক আক্রমণ শুরু করেছে, যা গাজায় কমপক্ষে ৩৪ হাজার ১৮৩ জন নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। ৭ অক্টোবর হামাস ইমরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ২৫০ জনকে অপহরণ করে। তবে ইসরায়েলের অনুমান, গাজায় ১২৯ বন্দি রয়ে গেছে, যার মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে। গতকাল জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। রমজানের আগে এ চুক্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলেও এখন দুপক্ষের মতবিরোধের কারণে তা স্থবির হয়ে পড়ে আছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি সোমবার বলেছে, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ও দাফন করা প্রায় ২০০ জনের লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। নৃশংসভাবে ওই ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে সেখানে গণকবর দেয়। এ বিষয়ে গতকালও ইসরায়েল কোনো মন্তব্য করেনি। জাতিসংঘ বলেছে, নাসের এবং গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে ধ্বংসযজ্ঞগুলো ‘ভয়ংকর’ ছিল। অঞ্চলটিতে এ দুটি ছিল বৃহত্তম চিকিৎসা কেন্দ্র। সেখানেই হত্যাযজ্ঞ চালায় ইসরায়েল। একটি ‘স্বাধীন’ তদন্ত দাবি করে, জাতিসংঘের অধিকার কর্মকর্তা প্রধান ভলকার তুর্ক আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে হাসপাতালগুলোকে ‘বিশেষ সুরক্ষা’ দেওয়া উচিত। ইসরায়েলের গাজা আক্রমণের বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা নিয়ে বৈশ্বিক বিরোধিতা বেড়েছে। ইসরায়েলকে এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী দাবি উঠেছে ইসরায়েল বিস্তীর্ণ এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি করেছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজাবাসীকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর