মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোর গৃহীত নীতির কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির এবারের বার্ষিক প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। সেই সূত্রেই মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মনোভাব ও অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদনে কড়া মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদন পেশ করেন জার্মানিতে অ্যামনেস্টির মহাসচিব জুলিয়া ডাচরো। তিনি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘বেয়ারবক মানবাধিকারভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছেন না।’ ইসরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের’ কথাও উল্লেখ করেছেন অ্যামনেস্টি প্রধান। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপের কিছু নেতা এবং ইইউ নেতৃত্ব জাতিসংঘের চার্টারে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারে উল্লিখিত নীতিগুলো মানছেন না। তাদের আচরণ ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের উদাহরণ হয়ে থাকছে।’ গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘হামাস ভয়ংকর অপরাধ করেছে।’ যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং অনেক দেশ হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে। তবে ডাচরো বলেছেন, ‘অ্যামনেস্টি হামাস বা কোনো সংগঠনকেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে অভিহিত করে না, কারণ, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি।’
ইসরায়েল নিয়ে অ্যামনেস্টি : অ্যামনেস্টির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েল প্রত্যাঘাতের প্রচার শুরু করে। এরপর বেসামরিক মানুষের ওপর, বেসামরিক পরিকাঠামোর ওপর নির্বিচারে আক্রমণ শুরু হয়।’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইন মেনে গাজায় আক্রমণ করেছে। কিন্তু বাস্তবে তারা এ আইনের প্রধান বিষয়গুলো লঙ্ঘন করেছে।’ গত দুই বছর ধরে ইসরায়েল ও ইহুদি সংগঠনগুলো অ্যামনেস্টির প্রবল সমালোচনা করছে। কারণ, আগের রিপোর্টে অ্যামনেস্টি ইসরায়েলকে ‘বর্ণবিদ্বেষী’ বলে অভিযোগ করেছিল। ইসরায়েল সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। ইসরায়েলের অভিযোগ, অ্যামনেস্টি ইহুদিবিদ্বেষ বাড়াচ্ছে এবং তারা সংঘাত নিয়ে একপেশে মনোভাব নিয়েছে।মানবাধিকার নিয়ে মন্তব্য : অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ‘১৯৪৮ সালের সর্বজনীন মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি থেকে বিশ্ব পেছনের দিকে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে অনেক সরকার ও সমাজ স্বৈরাচারী নীতি নিয়েছে, যার ফলে মতপ্রকাশের অধিকার ও লিঙ্গ-সাম্যের ওপর আঘাত এসেছে।’ এ রিপোর্টে ইউক্রেন যুদ্ধ ও চীনের আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের প্রসঙ্গও আছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে বলা হয়েছে, ‘এর ফলে বারবার যুদ্ধাপরাধ করা হয়েছে।