রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

জাতিসংঘের কালো তালিকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী

সংঘাতে শিশুদের নিপীড়ন করার দায়ে এ সিদ্ধান্ত

ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করছে জাতিসংঘ। সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের নিপীড়ন করার দায়ে এ সিদ্ধান্ত সংস্থাটির। একজন ইসরায়েলি কূটনীতিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত যেসব দেশ সশস্ত্র সংঘাতের সময় শিশুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও অত্যাচার করে, সেসব দেশকে এ তালিকায় যুক্ত করে জাতিসংঘ। টানা আট মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন চলছে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অব্যাহত হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করার বিষয়ে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি পেয়েছেন। এরদান দাবি করেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে আপত্তিজনক ও ভুল। আমি লজ্জাজনক এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বলেছি-আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক। ইসরায়েলকে কালো তালিকাভুক্ত করেছেন একমাত্র মহাসচিব, যিনি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করেন এবং ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণার মাধ্যমে পরিচালিত হন।’ এদিকে এ বিষয়ে ফোনকলের ভিডিও তিনি এক্সে প্রকাশ করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। জাতিসংঘের ওই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিলাদ এরদানকে ফোন করেছিলেন বৈশ্বিক এ সংস্থাটির এক কর্মকর্তা। গিলাদ ফোনকলে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান এবং এর অংশবিশেষই পরে এক্সে পোস্ট করেন। ডুজারিক বলেন, বার্ষিক ‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’ প্রতিবেদনে সংযোজিত নতুন তালিকাভুক্ত দেশগুলোর কথা জানাতেই জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা ইসরায়েলি দূতকে ফোন করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ মহাসচিব প্রতি বছর নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রতিবেদন পাঠান, যেখানে বিশ্বব্যাপী সংঘাতে ‘শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিপীড়নে সম্পৃক্ত পক্ষগুলো’র তালিকা দেওয়া হয়। এতে শিশুদের হতাহত করাসহ নিপীড়নের প্রমাণ এবং যৌন সহিংসতার তথ্য থাকে। জাতিসংঘ মহাসচিবের চলতি বছরের এ প্রতিবেদনটি ১৪ জুন নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। তবে তার আগেই ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত এরদানকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এ হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। গাজার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকায় এ পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর