শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

হামাসের প্রস্তাবে ইসরায়েলের না গাজায় শান্তি অনিশ্চিত

► গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ - যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন চেয়েছিল হামাস, কিন্তু ইসরায়েল তা নাকচ করে দিয়ে আগের অবস্থানেই ফিরে গেছে

► গাজায় যুদ্ধ বন্ধের জন্য আমাদের সদিচ্ছা রয়েছে। চুক্তির ব্যাপারে আমরা আমাদের মতামতে সে কথা স্পষ্ট জানিয়েছি

 

গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ফের অতল গভীরে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন চেয়েছিল হামাস। এ প্রস্তাবের মধ্যে আছে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির পরিকল্পনায় বেশকিছু পরিবর্তন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সংগঠনটির উদ্দেশে বলেছেন, ‘দরকষাকষি বন্ধের সময় এসেছে’। আর মঙ্গলবার সেই প্রস্তাব সরাসরিই নাকচ করে দিয়ে আগের অবস্থানেই ফিরে গেছে ইসরায়েল।

গত মাসে বাইডেনের ঘোষণা করা শান্তি প্রস্তাবের পুরো বিষয়গুলো এখনো প্রকাশ্যে আসেনি। তবে হামাস জানিয়েছে, তারা ওই প্রস্তাবে কয়েকটি সংশোধনী আনতে চেয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও পাকাপাকি যুদ্ধ বন্ধের সময়সীমা জানানো। কিন্তু এই সংশোধনীতে নারাজ ইসরায়েল গোটা চুক্তি নাকচ করে দিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার দায় হামাসের ওপর চাপানোয় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। যদিও সূত্রের দাবি, আমেরিকার সঙ্গে কাতার ও মিসরের প্রতিনিধিরা নতুন কোনো সমাধান বের করার চেষ্টা করছেন। বাইডেনের তিন দফা প্রস্তাবের মধ্যে ছিল- আপাতত ছয় সপ্তাহের জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজায় ঘনবসতি এলাকা থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার। কিন্তু ইসরায়েল সেই প্রস্তাব থেকে পিছিয়ে আসায় গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আশু সম্ভাবনা দেখছেন না কেউই। হামাসের মুখপাত্র ওসামা হামদান লেবাননের এক টিভি চ্যানেলে বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধের জন্য আমাদের সদিচ্ছা রয়েছে। চুক্তির ব্যাপারে আমরা আমাদের মতামতে সে কথা স্পষ্ট জানিয়েছি।’ কিন্তু সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের এক প্রতিনিধির দাবি, ‘হামাসের উত্তর পেয়েছি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে প্রস্তাব এনেছিলেন হামাস তা বন্দি বিনিময়ের শর্ত চাপিয়ে নাকচ করে দিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আপত্তি সত্ত্বেও ইসরায়েল যে ওই প্রস্তাবে রাজি, তা এতদিন ধরে জোর দিয়ে বলে আসছিল হোয়াইট হাউস। এদিনের ঘটনার পর তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে বাইডেন প্রশাসন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে প্রস্তাবনা ১২ দিন আগেই দেওয়ার কথা বলেছেন তা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এখনো প্রকাশ্যে অনুমোদন করেননি।

ব্লিঙ্কেন অবশ্য বলেছেন- সোমবার জেরুজালেমে এক বৈঠকে নেতানিয়াহু তার ‘অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন’। ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক চাপের পাশাপাশি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও ওই প্রস্তাবের সমর্থনে একটি রেজ্যুলেশন পাস করেছে। উপসাগরীয় দেশটিতে কূটনৈতিক এ সফরের মাধ্যমে ব্লিঙ্কেন আঞ্চলিক সংকট সমাধানের চেষ্টা করছেন। তার প্রেস পুলে বিবিসিও অংশ নিচ্ছে। তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন হাসিমুখেই। দেশটি এ সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। হামাসের রাজনৈতিক শাখার কার্যালয় আছে সেখানে। আবার ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনারও একটি চ্যানেল আছে।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেনকে কিছুটা উত্তেজিতও দেখা গেছে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস যেসব পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে তা নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।

ব্লিঙ্কেন আরও বলেছেন, ‘হামাস যেসব প্রস্তাব গত ৬ মে দিয়েছিল তার সঙ্গে এবারের প্রস্তাব প্রায় অভিন্ন। এর পেছনেই পুরো বিশ্ব আছে। ইসরায়েলও তা গ্রহণ করেছে। এখন হামাস একটিই প্রতিক্রিয়া দিতে পারে এবং তা হলো ‘ইয়েস’।

সর্বশেষ খবর