রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
এক দিনেই নিহত ৪০

গাজায় নির্বিচার হামলা

অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে উপত্যকাজুড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ৮৩৪

গাজা উপত্যকায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় দখলদার বাহিনী গাজা সিটি, রাফা শহর ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করে। কমপক্ষে ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২২৪ জন আহত হন। এতে গত অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে উপত্যকাজুড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ৮৩৪ জনে ঠেকেছে এবং আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজার ৮৫৮ জনে। গতকাল অবরুদ্ধ উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, বুরেজ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে তাদের তিন কর্মী নিহত হয়েছেন। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা উদ্ধার কাজ চালাতে গেলে তাদের ওপর বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েলি সেনারা। এতে আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। গাজা সিটির একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত চার শিশু নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গাজা সিটির আল-ওয়েধা স্ট্রিটে অবস্থিত আবু খাদরা গোত্রের বাড়িতে ইসরায়েলি সেনাদের বোমাবর্ষণে নিহতদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজা সিটির ইয়ারমুক এলাকায় একটি আবাসিক বাড়িতে বোমা হামলা চালালে দুই শিশু নিহত ও পাঁচজন আহত হয়। অন্যদিকে গাজা উপত্যকার ফ্রন্টগুলোতে ইসরায়েলি সেনা ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। গাজা সিটির পুবে অবস্থিত শুজাইয়া এলাকার তুমুল সংঘর্ষে অন্তত তিন ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে তেলআবিব। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ক্রমাগত নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়ে আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। এমনকি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হলেও, হানাদার ইসরায়েল সরকার তা লঙ্ঘন করে চলেছে। আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের অবরোধের মধ্যে ধ্বংসস্তূপ ও মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে।

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনসহ নানা কারণে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছে রুশ ফেডারেশনের অংশ চেচনিয়া প্রজাতন্ত্র। চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিতে তাদের জন্য পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের নেতা রমজান কাদিরভ এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাস্তুচ্যুত দুই শতাধিক ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে চেচনিয়ায়। রমজান কাদিরভ বলেছেন, আমাদের তাৎক্ষণিক পরিকল্পনার মধ্যে আছে- চেচেন প্রজাতন্ত্রে একটি ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় তৈরি করা, যাতে শরণার্থীরা তাদের জাতীয় পরিচয় রক্ষা করতে পারে।

কাদিরভ জানিয়েছেন, গ্রোজনির দক্ষিণ-পূর্বে গর্নি ক্লিউচ চিলড্রেন রিসোর্টে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের এখন চেচনিয়ার রাজধানীর ভিসাইতোভস্কি জেলার একটি এলাকায় রাখা হবে, যেখানে ২০৯ জন ৪০টি পৃথক ও নতুন অ্যাপার্টমেন্টে বাস করবে। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন অনুসারে, রমজান কাদিরভের মা আয়মানি পরিচালিত একটি দাতব্য সংস্থা পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ করেছে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিতে। এসব অ্যাপার্টমেন্টে ২০৯ জন আশ্রয় পাবে। তারা এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। শুক্রবার রমজান কাদিরভ এক বিবৃতিতে এসব অ্যাপার্টমেন্ট বণ্টনসংক্রান্ত ঘোষণায় বলেছেন, সন্তোষজনক আবাসন পাওয়ায় ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের অভিনন্দন।             -আলজাজিরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর