বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

গাজার মানবিক অঞ্চলেও বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

উপত্যকাটিতে ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে

গাজার ‘মানবিক অঞ্চলে’ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ নৃশংস হামলায় অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলের ওই বিমান হামলায় একই পরিবারের ৯ জনসহ মোট ১২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া গাজার খান ইউনিসের শরণার্থী শিবিরগুলোতেও ইসরায়েলের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে এবং সেখান থেকে গাজার বাসিন্দাদের সরে যেতে বল প্রয়োগ করছে ইরসায়েলি বাহিনী।

এদিকে গতকাল খান ইউনিসের ইউরোপিয়ান হাসপাতাল থেকে শত শত অসুস্থ ও আহত মানুষকেও পালাতে বাধ্য করেছে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলের স্থল আক্রমণ থেকে ওই অঞ্চলের হাসপাতালগুলোকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন।

সম্প্রতি ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি খান ইউনিসের শরণার্থী শিবির এবং তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এতে গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখের কাছাকাছি। বলা চলে গাজার প্রায় সব বাসিন্দারাই কোনো না কোনোভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ৯ মাসের অমানবিক হামলায় গাজায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯২৫ জনে। এ ছাড়া গত ৯ মাসের ইসরায়েলে হামলায় আহত হয়েছেন ৮৭ হাজার ১৪১ ফিলিস্তিনি।

গাজার শিশুদের মধ্যে ছড়াচ্ছে মারাত্মক চর্মরোগ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে,  গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি শিশু চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে। বেশিরভাগের শরীরে সাদা-লাল ফুসকুড়িতে ভরে গেছে।

ডব্লিউএইচওর হিসাব বলছে, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৯৬ হাজার ৪১৭টি খোসপাঁচড়া (স্ক্যাবিস) ও পরজীবী সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। জলবসন্তে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ৯ হাজার ২৭৪টি। ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়ার ঘটনা ৬০ হাজার ১৩০টি। ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণজনিত রোগের ঘটনা ১০ হাজার ৩৮টি।

দেইর আল-বালাহ আশ্রয়শিবিরে অস্থায়ীভাবে একটি ক্লিনিক চালাচ্ছেন ফার্মাসিস্ট সামি হামিদ। তিনি বলেন, গাজায় বিশেষ করে খোসপাঁচড়া ও জলবসন্তের বিস্তার ব্যাপক। গাজায় ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) চিকিৎসা বিষয়ক সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আবু মুগাইসিব বলেন, গরমে ঘাম বেশি হচ্ছে। শরীরে ময়লা জমছে। এতে ফুসকুড়ি ও অ্যালার্জি হচ্ছে। এগুলো চুলকাতে চুলকাতে সংক্রমণ হয়ে যায়। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, আশ্রয়শিবিরে লেশম্যানিয়াসিসের মতো অন্য চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। তা মারাত্মক আকার ধারণ করলে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে। মুগাইসিব বলেন, গাজার শিশুরা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। কারণ অপুষ্টিতে তাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর