সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
ফ্রান্সে জাতীয় নির্বাচন

দ্বিতীয় দফার ভোটেও অতি-ডানরা

আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন ঘোষণা করলেও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে বিরোধীরা জয়ী হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় বড় ধরনের বাধার মুখে পড়তে পারেন তিনি

যুক্তরাজ্যের ভোট শেষ। এক যুগের বেশি সময় পর ক্ষমতায় এসেছে লেবার পার্টি। এবার চলছে ফ্রান্সে নির্বাচন। যা ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সরকারের। অতি-ডানপন্থিদের উত্থানের নির্বাচনে গতকাল চূড়ান্ত দফায় ভোট দিয়েছেন ফ্রান্সের মানুষ। প্রথম দফায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া অতি-ডানপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) এই নির্বাচনে জয়ের আশা করছে। অন্যদিকে তাদের ঠেকাতে ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থিদের সঙ্গে একাট্টা হয়েছে বামপন্থিরা। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ছোট শহরগুলোতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আর বড় শহরে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। আজ ফলাফল জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রান্সে প্রায় ৪ কোটি ৯৩ লাখ ভোটার রয়েছেন।

সবশেষ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষষ্ঠতা না পেলেও ন্যাশনাল র‌্যালি দ্বিতীয় দফার নির্বাচনেও সর্বোচ্চ আসনে জয়ী হবে বলে আভাস মিলছে। বামপন্থিদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনগুলোতেও প্রথম দফার ভোটে তারা শক্তিশালী অবস্থানে ছিল। শেষ পর্যন্ত মারিন ল্য পেনের আরএন জয়ী হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে সরকার গঠনের সুযোগ পাবে অতি-ডানপন্থিরা।

এদিকে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন ঘোষণা করলেও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে বিরোধীরা জয়ী হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় বড় ধরনের বাধার মুখে পড়তে পারেন তিনি।

প্রথম দফায় যা হয়েছে : ৩০ জুন প্রথম দফার ভোটে আরএন ও সমমনা দলগুলো ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিছ। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে মধ্যপন্থি এনসেম্বল ব্লক প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। যেসব প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেয়েছেন, তাদের আর দ্বিতীয় দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে না। এর মধ্যে রয়েছেন ল্য পেনের জোট থেকে ৩৯ জন, বাম জোট থেকে ৩২ জন, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জোট থেকে দুই জন, রক্ষণশীল এলআর থেকে একজন এবং অন্যান্য ডান দল থেকে দুজন। বাকি ৫০১টি আসনের ভাগ্য নির্ধারিত হবে দুই থেকে চারজন প্রার্থীর মধ্যে। ফরাসি পার্লামেন্টে ম্যাজিক ফিগার ২৮৯। অর্থাৎ যে দলের কাছে ২৮৯টি আসন থাকবে, তারাই সরকার গড়তে পারবে। আরএন এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে দলটির নেতা জর্ডান বারডেলাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিতে হবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে।

এদিকে আরএনকে  আটকাতে বামপন্থি এবং মধ্যপন্থি দলগুলো একত্রিত হয়ে ‘রিপাবলিকান জোট’ তৈরি করেছে। এই জোটের ২০০ জনেরও বেশি প্রার্থী নিশ্চিত করেছেন তারা দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে লড়বেন না, যাতে ডানপন্থিবিরোধী ভোটগুলো একই জায়গায় পড়ে। আরএন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও ২০২২ সালের তুলনায় তাদের আসন  সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঝুলন্ত পার্লামেন্টে তারাই আধিপত্য বিস্তার করবে। এর ফলে ২০২৭  সাল অবধি অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট  হিসেবে ম্যাক্রোঁর মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নীতির বাস্তবায়নে সমস্যা হতে পারে। এতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ল্য পেনের জয়ী হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।

সর্বশেষ খবর