বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফ্রান্সের নির্বাচনের ফলাফল ইউরোপের মাথাব্যথার কারণ

ফলাফলের পূর্বাভাস দেখেই বামপন্থি জোটের নেতা জ্যঁ লুক মেঁলশঁ ঘোষণা দেন, তারাই সরকার গড়বেন। এরপর গ্রিন পার্টির প্রধানও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জিতেছি। আমরাই সরকার গঠন করব

ইউরোপের অন্যান্য দেশে মতো ফ্রান্সেও ডানপন্থিদের প্রভাব ক্রমে বাড়ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে এর প্রতিফলন দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে কট্টর ডানপন্থিদের জনপ্রিয়তা কমাতে জোটবদ্ধ হয়েছিল ফ্রান্সের বামপন্থি দলগুলো। একটি বৃহত্তর জোট হিসেবে সামনে এসেছিল তারা। যার মধ্যে ছোট ছোট কট্টর বামপন্থি দল যেমন আছে, তেমনি সমাজতান্ত্রিক, গ্রিন পার্টির মতো দলও আছে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল ডানপন্থিদের জনপ্রিয়তা কমানো। শেষ পর্যন্ত তারা সফল হয়েছে। আর মেরিন লে পেনের কট্টর ডানপন্থিরা আকস্মিক নির্বাচনে জয়ী হতে ব্যর্থ হওয়ায় ফ্রান্সের অনেক মিত্র স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও তারা উল্লেখ করেছেন, ঝুলন্ত পার্লামেন্টের একটি জগাখিচুড়ি জোটও ইউরোপের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। লে পেনের ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সের প্রথম উগ্র ডানপন্থি সরকার গঠনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছিল। এটি ইউরো অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক নীতিকে বিপর্যস্ত করার জন্য হুমকিস্বরূপ।

ডানপন্থিদের ঠেকাতে গঠিত নতুন জোটের নাম দেওয়া হয়েছিল নিউ পপুলার ফ্রন্ট। রবিবারের নির্বাচনের পর দেখা গেল, সেই জোটই সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। যদিও তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সব মিলিয়ে তাদের দখলে ১৮২টি আসন। এর ঠিক পরই আছে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি দলের জোট এনসেম্বল। তৃতীয় স্থানে ডানপন্থি এনআর। আর চতুর্থ স্থানে রিপাবলিকান দল। সোমবার ফলাফলের পূর্বাভাস দেখেই বামপন্থি জোটের অন্যতম নেতা জ্যঁ লুক মেঁলশঁ ঘোষণা দেন, তারাই সরকার গড়বেন। লেফট উইং ফ্রান্স আনবোড (এলএফআই) দলের নেতা তিনি। এ সময় জোটের অন্য নেতারাও পাশে ছিলেন।  এরপর গ্রিন পার্টির প্রধানও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জিতেছি। আমরাই সরকার গঠন করব।’ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রধান অলিভার ফউরে বলেছেন, ‘নতুন ইতিহাসের মুখোমুখি ফ্রান্স।

পপুলার ফ্রন্টকেই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’ ভাষণে নিজেদের লক্ষ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন ফউরে। জানিয়ে দিয়েছেন, কোনোভাবেই তাঁরা মধ্যপন্থি জোটের সঙ্গে হাত মেলাবেন না। ফলে পার্লামেন্ট যে ঝুলে যাচ্ছে তা অনেকটাই নিশ্চিত। নির্বাচনের ফলে ফরাসি পার্লামেন্ট বাম, মধ্যপন্থি এবং অতি ডান- তিনটি বড় গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় যাদের একসঙ্গে কাজ করার কোনো নজির নেই। তা বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য।

সর্বশেষ খবর