মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
পাকিস্তান পরিস্থিতি

ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে

আর প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না ইমরান খান! রাজনৈতিক জীবন শেষ

ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে

নির্বাচনে ভালো করেও পাকিস্তানে ক্ষমতায় আসতে পারেনি ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ইমরান খান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এবার তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করার প্রস্তুতি চলছে। শাহবাজ শরিফ সরকার ইমরান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, শিগগিরই তার দলকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হবে। দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাহবাজ সরকারের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, পাকিস্তান সরকার তেহরিক-ই-ইনসাফকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার দাবি, ইমরানের দল দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত। বর্তমানে দুই মামলায় ৭১ বছর বয়সি ইমরান খানকে ইতোমধ্যেই জেলে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি।

আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি নস্যাৎ করার চেষ্টা : সরকারের দাবি, ইমরান খানের দলের নেতারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি বানচাল করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। এ কারণে সে দেশ আইএমএফের সহায়তা পেতে পারেনি।

কাদের বিরুদ্ধে মামলা : সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬-এর অধীনে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, সাবেক স্পিকার কাসিম সুরি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির বিরুদ্ধে রাষ্ট্র উদ্যোগের রেফারেন্স ফাইল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পিটিআই এবং পাকিস্তান একসঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে না। তাই এই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টে যাবে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি বলেন, এর আগে ক্ষমতাসীন পিটিআই দল ২০২৩ সালের ৯ মের সহিংসতায় জড়িত থাকা এবং আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তির বিরুদ্ধে পিটিআই দলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা জড়িত থাকার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার এই ঘোষণা দেওয়ার আগে ৯ মে সহিংসতায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশিকে অভিযুক্ত করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী আইএমএফের অর্থায়ন ইস্যু সম্পর্কে বলেন, বিদেশি অর্থায়ন বিষয়ক মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে পিটিআই।

তিনি আরও অভিযোগ করেন পিটিআই দলটি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের কাছ থেকে অর্থ পেয়েছে। কেন ছয় বছরের জন্য স্টে অর্ডার চাওয়া হয়েছে প্রশ্ন রাখেন আতাউল্লাহ তারার। অর্থায়ন বিষয়ক ওই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করার কিছুই নেই ইমরান খানের দলের। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দল নির্বাচনে নিষিদ্ধ থাকায় স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতারা।

তারা পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেলেও নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছিল যে, সংরক্ষিত ৭০টি আসনের ভাগ পাবে না স্বতন্ত্ররা। এসব আসন কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নির্ধারিত। ফলে পার্লামেন্টের ওই আসনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে বেশির ভাগ আসনই পেয়েছিল পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের দলগুলো। তবে শুক্রবার এক আদেশে পিটিআই পার্লামেন্টে ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য বলে ঘোষণা দেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে পিটিআই জাতীয় পরিষদে একক বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পট প্রস্তুত হয় এবং সরকারের ওপর চাপ বাড়ে। এরপরই পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের ঘোষণা এলো। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিষদে একক বৃহত্তম দল হওয়া থেকে দলটিকে ঠেকানোর চেষ্টা চলছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর