শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রতিশোধ নিতে আলোচনায় বসছে মিত্ররা

হানিয়া হত্যা

প্রতিশোধ নিতে আলোচনায় বসছে মিত্ররা

তেহরানে হামলা চালিয়ে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য ইরান ও দেশটির মিত্ররা ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। এবার এ হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নিতে আলোচনায় বসছে তারা। জানা গেছে, এ ব্যাপারে আলোচনা করতে ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তারা লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনের মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইরানের মাটিতে হানিয়াকে হত্যার জন্য ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হানিয়া হত্যায় ইরান মূলত ইসরায়েলকেই দায়ী করছে এবং এ ঘটনা আঞ্চলিক যুদ্ধের উদ্বেগকে উসকে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করছে।

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া বুধবার সকালে তেহরানে গুপ্তহত্যার শিকার হন। নতুন ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরানে গিয়েছিলেন তিনি।

হামাসের সামরিক শাখার প্রধান দেইফ নিহত : ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ ১৩ জুলাইয়ে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে   ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

গতকাল তারা বলেছে, ‘আমরা এখন নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, মোহাম্মদ দেইফকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’ গাজার খান ইউনিস নগরীর একটি কম্পাউন্ডে দেইফকে নিশানা করে ১৩ জুলাইয়ে হামলা চালানো হয়। তবে হামাস এখনো দেইফের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানায়নি। আল-জাজিরা হামাসের একজন সদস্য ইজ্জাত আল রাশকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, দেইফ হত্যার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

ইসরায়েলের ভাষ্য, তাদের দেশের দক্ষিণাঞ্চলে  গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধাদের  হামলায় ১২০০ মানুষ নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করার ঘটনার পরিকল্পনাকারী ছিলেন দেইফ। তিনি হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান ছিলেন। কয়েক দশক ধরে দেইফ ইসরায়েলের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিলেন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সাতবার হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যান তিনি।

ছেলেখেলা করছেন ব্লিঙ্কেন : গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাম্প্রতিক আহ্বান ছিল নিছকই ‘ফাঁকা বুলি’। তেল আবিব থেকে আল জাজিরাকে এমনটাই বলেছেন ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের কলামিস্ট গিডিয়ন লেভি। এর আগে বুধবার ব্লিঙ্কেন জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। ওই সময় গাজায় যুদ্ধবিরতির গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। এর প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছেন লেভি। লেভি আরও বলেছেন, ‘যদি ব্লিঙ্কেন এবং মার্কিন প্রশাসন এ যুদ্ধ শেষ করতে চাইতেন, তাহলে এতদিনে তা শেষ হয়ে যেত।’

তার ভাষায়, ‘ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা এবং যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলকে অনুরোধ করা শুধুই এক প্রহসন। এটা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নয়, এটা ছেলেখেলা।’ লেভি আরও বলেন, নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করতে চান না। আর এটাই তেহরান ও বৈরুতে হত্যাকান্ডের প্রধান কারণ। ইসরায়েলি জনসাধারণের মেজাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে লেভি বলেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান এবং লেবাননের সম্ভাব্য হুমকি সম্পর্কে জনমনে কোনো আতঙ্ক নেই। আতঙ্কের কারণ থাকলেও, তারা সেটাকে আতঙ্ক মনে করেন না’। ‘তবে ইসরায়েলিরা খুবই সতর্ক বলে জানিয়েছেন লেভি। ‘তারা নিজেদের প্রস্তুত করছে বলে খবর আছে। তবে তাদের মধ্যে তাড়াহুড়ো নেই। বরং তারা মনে করে যে, তারা অজানার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন, তাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন’, লেভির মন্তব্য।

সর্বশেষ খবর