ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছেন। তেল আবিবে গত সপ্তাহে ব্যর্থ আত্মঘাতী হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী যে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে, সেটির অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিতে গতকাল এই নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। কাটজ এক টুইটে বলেন, আমাদের সন্ত্রাসের হুমকির মোকাবিলা ঠিক সেভাবেই করতে হবে, যেমন আমরা গাজায় সন্ত্রাসের অবকাঠামো মোকাবিলা করছি। এর মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সাময়িকভাবে সরিয়ে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য পদক্ষেপ। তিনি এ অভিযানকে ‘যে কোনো অর্থে একটি যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
পশ্চিম তীরে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানে অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে। ইসরায়েল কাটজ জানান, জেনিন, তুলকারেমসহ পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় ইরানের সমর্থনে গড়ে ওঠা নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলার জন্য ইসরায়েলি বাহিনী কাজ করছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর গাজা উপত্যকার প্রায় ৮৮.৫ শতাংশ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মে মাসে রাফাহ থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল এই যুদ্ধে গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তির জন্য কনভেনশনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে গণহত্যা, গণহত্যার উসকানি, গণহত্যার প্রচেষ্টা এবং গণহত্যার উসকানির শাস্তি দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ক্ষুব্ধ জাতিসংঘ : মধ্য গাজার এল-বালা থেকে সাধারণ মানুষ, জাতিসংঘকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘোষণার পরেই ইসরায়েলের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলের এ আচরণের ফলে গাজায় ত্রাণ পাঠানো ব্যাহত হচ্ছে বলে গতকাল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়ের জন্য সমুদ্রসৈকতই শেষ ভরসা : ফিলিস্তিনের গাজার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে। নতুন নতুন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা আশ্রয়ের জন্য নির্ভরযোগ্য জায়গাও খুঁজে পাচ্ছেন না। অনেকেই বাধ্য হয়ে সমুদ্রসৈকতে আশ্রয় নিয়েছেন। কায়রোয় চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনায় উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে গাজা উপত্যকার ফিলাডেলফি ও নেতজারিম করিডরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মতপার্থক্য এখনো রয়ে গেছে। এটা আলোচনার ক্ষেত্রে একটি প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস ও মধ্য গাজার দেইর আল-বালা হতে সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বর্তমানে তারা সমুদ্রসৈকতের কাছে স্থাপিত তাঁবুতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, কারণ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।