২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৮:১৪

কোরআন যাদের জন্য উপদেশ স্বরূপ

মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ

কোরআন যাদের জন্য উপদেশ স্বরূপ

আল্লাহ বলেন, ‘তা কল্যাণময় উপদেশ, আমি তা অবতীর্ণ করেছি, তবু কি তোমরা তা অস্বীকার করো?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৫০)

তাফসির : আলোচ্য আয়াতে পবিত্র কোরআনকে অস্বীকারের মাধ্যমে সব কল্যাণ উপেক্ষার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। মূলত কোরআন মানবজাতির জন্য প্রয়োজনীয় উপদেশ ও কল্যাণের ফলগুধারা। কোরআন অস্বীকারকারীদের তাচ্ছিল্য করে এমন গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ অস্বীকার করা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। পবিত্র কোরআন অধ্যয়নের মাধ্যমে আল্লাহর ও নবী-রাসুলদের পরিচয়, শরিয়তের বিধি-নিষেধ, পরকালে জান্নাত বা জাহান্নাম লাভের উপায়সহ নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ হয়।
 
মোটকথা মানবজীবনের ইহকাল ও পারকালীন প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে কোরআনে দিকনির্দেশনা রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা কুফরি করেছে ও আল্লাহর পথে বাধা দিয়েছে, আমি তাদের শাস্তির পর শাস্তি বৃদ্ধি করব। কারণ তারা অশান্তি সৃষ্টি করত। সেই দিন আমি সব সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে তাদের নিজের বিষয়ে একজন সাক্ষীকে উত্থিত করব এবং তাদের বিষয়ে সাক্ষী হিসেবে আপনাকে নিয়ে আসব। আমি সব বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা, পথনির্দেশ ও দয়াস্বরূপ আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা আত্মসমর্পণকারীদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৮৯)
পবিত্র কোরআন আগের সব আসমানি কিতাবের সত্যায়নকারী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে। তা অনুসরণে মুমিনদের মধ্যে তিনটি শ্রেণি রয়েছে। তাদের মধ্যে একদল ঈমান গ্রহণের পরও পাপকাজে লিপ্ত হয়, আরেক দল হারাম কাজ বর্জন করে শুধু আবশ্যকীয় বিধান পালন করে এবং আরেক দল ভালো কাজেও অগ্রগামী। তাদের সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনার প্রতি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছি তা সত্য, আগের সব কিতাবের তা সত্যায়নকারী, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সব কিছু জানেন ও দেখেন। অতঃপর আমি কিতাবের অধিকারী করেছি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাদের আমি মনোনীত করেছি, তবে তাদের কেউ নিজের প্রতি জুলুম করে, কেউ মধ্যপন্থী এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী, তাই মহাঅনুগ্রহ। ’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ৩২)

কোরআন নির্দেশনা পালন করে যারা নিজ জীবন পরিচালনা করবে তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পড়ে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করে এমন ব্যবসার যার কোনো ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কাজের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং তিনি নিজ অনুগ্রহে তাদের আরো বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল ও গুণগ্রাহী। ’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ২৯)

কোরআন পাঠ জীবনে আল্লাহর বরকত ও রহমত নিয়ে আসে। এর মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক রোগ-ব্যাধি দূর হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ, তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং তা তোমাদের অন্তরে যা আছে তার আরোগ্য, মুমিনদের জন্য তা পথনির্দেশ ও অনুগ্রহস্বরূপ। ’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৫৭)

কোরআন পাঠকারীর জন্য কিয়ামতের দিন বিশেষ সম্মান থাকবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) বলেছেন, (কিয়ামতের দিন) কোরআন পাঠকারীকে বলা হবে, পাঠ করতে থাকো এবং ওপরে আরোহণ করতে থাকো এবং দুনিয়ায় যেভাবে ধীরেসুস্থে পাঠ করতে, ঠিক সেভাবে ধীরে ধীরে পাঠ করো। যে আয়াতে তোমার পাঠ সমাপ্ত হবে সেখানেই তোমার স্থান। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯১৪) 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর