১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৮:২০

দ্বিনি ইলম বা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের ওপর ফরজ

মাইমুনা আক্তার

দ্বিনি ইলম বা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের ওপর ফরজ

দ্বিনি ইলম বা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের ওপর ফরজ। কেননা ইলম অর্জন না করলে সঠিকভাবে আল্লাহর ইবাদত করা যায় না। ইলম না থাকলে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করাও যায় না। তাই মহান আল্লাহ দ্বিনি ইলম শিক্ষাকারী ও শিক্ষাদাতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দান করেছেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যে পবিত্র কোরআন শিখে এবং শেখায়। (বুখারি, হাদিস : ৫০২৭)

কারণ যারা কোরআন শিক্ষা দেয়, তারা এর সওয়াব অনন্তকাল ধরে পেতে থাকে। মৃত্যুর পরও তাদের সওয়াবের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার কাজ (কাজের সব ক্ষমতা) ছিন্ন (বাতিল) হয়ে যায়; কিন্তু তিনটি কাজের (সওয়াব লাভ) বাতিল হয় না; সদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান, যা দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৭৬)

তবে শর্ত হলো, ইলম অর্জন করতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন করলে তা মানুষকে সম্মানিত করবে না; বরং তার শাস্তির কারণ হতে পারে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ইলমের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা যায়, কোনো লোক যদি দুনিয়াবি স্বার্থ লাভের জন্য তা শিক্ষা করে, তবে সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের সুগন্ধি পাবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৬৪)

ইলম অর্জনের উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের সঙ্গে ঝগড়া করা। বিভিন্ন ইস্যুতে আলেমদের ওপর বাহাদুরি করা, সেই ইলম মানুষের জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি নির্বোধের সঙ্গে ঝগড়া করার জন্য অথবা আলেমদের ওপর বাহাদুরি প্রকাশের জন্য অথবা তার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য জ্ঞানার্জন করে, সে জাহান্নামি। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫৩) অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, তোমরা আলেমদের ওপর বাহাদুরি প্রকাশের জন্য, নির্বোধদের সঙ্গে ঝগড়া করার জন্য এবং জনসভার ওপর বড়ত্ব প্রকাশ করার জন্য ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা করো না। যে ব্যক্তি এরূপ করবে, তার জন্য রয়েছে আগুন আর আগুন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫৪)

এ জন্য ইলম অর্জনের সময় আমাদের অবশ্যই নিয়ত শুদ্ধ করে নেওয়া উচিত। যাতে ইলম আমাদের জন্য উপকারী হয়। রাসুল (সা.) সব সময় উপকারী ইলমের জন্য দোয়া করতেন। এবং অপকারী ইলম থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন।

ইলম অর্জনের পর আমাদের দায়িত্ব হলো সে অনুযায়ী আমল করা এবং অন্যকে দ্বিনের পথে আহ্বান করা। কেউ কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে, জানা থাকলে তা অবশ্যই তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেওয়া। কারণ জেনে ইলম গোপন করা মারাত্মক অপরাধ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জানা বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেসিত হয়ে তা গোপন করল, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাকে আগুনের লাগাম পরিয়ে দেবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৫৮)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে উপকারী ইলম অর্জন করার তাওফিক দান করুন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর