শিরোনাম
১৬ জুন, ২০২৪ ০৯:৫৫

কোরবানির শিক্ষা

মুফতি পিয়ার মাহমুদ

কোরবানির শিক্ষা

কোরবানির মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় আছে। এখানে কয়েকটি শিক্ষা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো :

১. কোরবানি আমাদের এ শিক্ষা দেয় যে ইবাদতের উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ ছাড়া আর কেউ, আর কোনো কিছু ইবাদতের উপযুক্ত নয়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আপনি বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু জগৎসমূহের রব আল্লাহর জন্য।

তাঁর কোনো শরিক নেই। এরই আদেশ করা হয়েছে আমাকে এবং আমিই প্রথম আনুগত্যকারী।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৬১-৬৩)

২. কোরবানি আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে সব বিষয়ে আল্লাহর সামনে আত্মসমর্পণ করা। তাঁর আদেশকে শিরোধার্য করা।

তাঁর হুকুম-আহকাম পালনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। কোরবানির ইতিহাসে আমরা দেখেছি, ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে বৃদ্ধ বয়সে প্রাপ্ত একমাত্র সন্তান ইসমাঈল (আ.)-কে জবেহ করার জন্য খুশিমনে রাজি হয়েছিলেন।
৩. কোরবানির একটি বড় শিক্ষা হলো, কোনো নেক কাজ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর কাছে সেগুলোর গোশত পৌঁছে না এবং সেগুলোর রক্তও না; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৭)

মানব ইতিহাসের প্রথম কোরবানির ঘটনায়ও এ বিষয়টি উল্লিখিত হয়েছে। (সুরা : মায়িদা,আয়াত : ২৭)

৪. কোরবানির আরেকটি শিক্ষা হলো, কোনো কাজেই অহংকার না করা, আত্মমুগ্ধতার শিকার না হওয়া; বরং বিনয়ী হওয়া এবং অন্তরে এই অনুভূতি থাকা চাই যে এটা একমাত্র আল্লাহর দয়ায় আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। অন্যথায় আমার পক্ষে তা সম্ভব ছিল না। কোরবানির ইতিহাসে আমরা লক্ষ করেছি, ইবরাহিম (আ.) যখন ইসমাঈল (আ.)-এর কাছে নিজ স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করে তাঁর অভিমত জানতে চেয়েছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘হে আমার পিতা! আপনাকে যে আদেশ করা হয়েছে তা করে ফেলুন। আপনি আমাকে আল্লাহ চাহেন তো অবশ্যই ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন।’ 

একবার নবী করিম (সা.) দুটি দুম্বা কোরবানি করেন, একটি নিজের পক্ষ থেকে, আরেকটি উম্মতের পক্ষ থেকে। দুম্বা দুটি জবাই করার সময় তিনি বলেন, হে আল্লাহ! এটা তোমার পক্ষ থেকেই এবং তোমার জন্যই। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস ১৫০২২; সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস : ২৮৯৯)

৫. কোরবানির বিশেষ একটি শিক্ষা হলো, সন্তানকে আল্লাহর অনুগত বানানোর চেষ্টা করা। কোরবানির ইতিহাসে আমরা দেখেছি, ইবরাহিম (আ.) মনে মনে এমন সন্তানের কথাই ভাবতেন এবং আল্লাহর কাছেও এমন সন্তানই প্রার্থনা করতেন যে আল্লাহর পূর্ণ অনুগত হবে, আল্লাহর জন্য জীবন দিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না। তিনি তা বাস্তবে প্রমাণ করেছেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর