শিরোনাম
২৯ জুন, ২০২৪ ০৮:০৪

দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা ও কাফেরের জন্য জান্নাততুল্য

আহমাদ ইজাজ

দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা ও কাফেরের জন্য জান্নাততুল্য

দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফেরের জন্য জান্নাত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, দুনিয়া মুমিনদের জন্য জেলখানা এবং কাফেরদের জন্য জান্নাত। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩০৭)

আলোচ্য হাদিসের একাধিক ব্যাখ্যা আছে। কেউ কেউ বলেন, পরকালের অফুরন্ত সুখ বা দুঃখের বিবেচনায় দুনিয়ার জীবন মানুষের জন্য কারাগার বা জান্নাত।

আল্লামা ইবনে তায়মিয়া (রহ.) বলেন, ‘মৃত্যুর পর মুমিনকে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে অফুরন্ত নিয়ামতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সে তুলনায় দুনিয়া তার কাছে কারাগারের মতো। অন্যদিকে মৃত্যুর পর কাফেরের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে যে আজাবের প্রতিশ্রুতি আছে, সে তুলনায় দুনিয়া তার কাছে জান্নাতের মতো। (ইবনু তায়মিয়াহ, জামেউর রাসায়েল ২/৩৬২

আলোচ্য হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘হাদিসের অর্থ হচ্ছে, প্রত্যেক মুমিন (দুনিয়ায়) কয়েদি বা জেলখানায় বন্দি। কেননা দুনিয়ায় তার জন্য অপছন্দনীয়, হারাম ও প্রবৃত্তিপূজা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।

কষ্টকর বিষয়গুলোতেও আনুগত্য করতে সে বাধ্য। অতঃপর যখন সে মারা যায়, তখন এই বাধ্যবাধকতা থেকে সে স্বস্তি লাভ করে এবং মহান আল্লাহ তার জন্য যে অফুরন্ত সুখ-শান্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন তার দিকে ধাবিত হয়। পক্ষান্তরে কাফের দুনিয়ায় সে যা (ভালো কিছু) অর্জন করে তার প্রতিদান খুব সামান্যই পেয়ে থাকে (যার বিনিময়ে সে দুনিয়ায় ভালো থাকে)। অতঃপর যখন মৃত্যুবরণ করে তখন চিরস্থায়ী আজাব ও অনন্ত দুর্ভাগ্যের দিকে এগিয়ে যায়।’ (নববী, শরহে মুসলিম ১৮/৯৩)
আমরা জানি যে জেলখানায় আসামি পরাধীন থাকে। সীমিত আহার ও সংকুুচিত পরিসরে অবস্থান করতে হয়, ইচ্ছা করলেই স্বাধীনভাবে কিছু করা যায় না। তেমনি মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর বিধানের অধীন দুনিয়াতে শৃঙ্খলিত জীবন যাপন করতে বাধ্য, সে নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রম করতে পারে না। তাই দুনিয়া মুমিনের জন্য কয়েদখানা। কিন্তু আখিরাতের অনন্ত জীবনে তার জন্য অপেক্ষা করছে চিরন্তন সুখ-শান্তি ও কল্পনাতীত বিলাসিতা।

হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহর ঘোষণা এসেছে—‘আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য জান্নাতে এমন সব নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছি, যা তার চোখ কোনো দিন দেখেনি, কান কোনো দিন শোনেনি এবং হৃদয় দিয়ে কল্পনাও করতে পারেনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৭৭৯)

মহান আল্লাহ আমাদের জান্নাতের বাসিন্দা হিসাবে কবুল করুন। আমিন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর