ইসলাম মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে। হিংসা নয়; ভালোবাসা আদান-প্রদান হোক পরস্পরের মধ্যে। ভালোবাসার বার্তা পরস্পরের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বলেছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে দিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন।
তাদের একজন হচ্ছে, ওই দুই ব্যক্তি, যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৭)
পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও ভালোবাসা হওয়া উচিত শুধু আল্লাহ তাআলার জন্যই। এভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়টাও কোনো পার্থিব স্বার্থে না হয়ে আল্লাহ তাআলার জন্যই হওয়া উচিত।
আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর কাছে বসে ছিল, এ সময় সেখান দিয়ে এক ব্যক্তি যাওবার সময় বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি এ ব্যক্তিকে ভালোবাসি। তখন নবী (সা.) তাকে বলেন, তুমি কি তাকে এ খবর জানিয়েছ? সে ব্যক্তি বলে, না। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘তুমি তাকে এ খবর জানাও। পরে সে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলে, আমি তোমাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি।
তখন সে ব্যক্তি বলল, তুমি যার জন্য আমাকে ভালোবাসো, সে যেন তোমাকে ভালোবাসে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৩৭)
এ হাদিসে তিনটি মূল বিষয় হলো, কেউ কাউকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসলে তাকে তা জানিয়ে দেওয়া চাই। ভালোবাসার ব্যক্তিকে ভালোবাসা সম্পর্কে অবহিত করা, এ নববী শিক্ষাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আর আল্লাহর জন্য পরস্পর ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলা ঈমানের দাবি। আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) নিজেও এমন আমল করেছেন।
মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাত ধরে বলেন, ‘হে মুআজ, আল্লাহর শপথ, আমি তোমাকে ভালোবাসি। অতঃপর তিনি বলেন, আমি তোমাকে কিছু অসিয়ত করতে চাই; তুমি নামাজ আদায়ের পর কখনো সময় ত্যাগ করবে না। তা হলো, ‘আল্লাহুম্মা আইন্নি আলা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিক।’
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার জিকির, আপনার শোকর এবং উত্তমরূপে আপনার ইবাদত করতে সাহায্য করুন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২২)
নবীজি (সা.) ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ মুআজ (রা.)-কে একটি দোয়াও শিখিয়ে দেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন