২৪ জুলাই, ২০২৪ ০৭:৪৩

আল্লাহর দ্বিন প্রচারের গুরুত্ব

মাইমুনা আক্তার

আল্লাহর দ্বিন প্রচারের গুরুত্ব

মানুষকে দ্বিনের পথে আহ্বান করা এবং আল্লাহর একত্ববাদের পথে ডাকা ছিল নবী-রাসুলদের কাজ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দুনিয়ায় যত নবী-রাসুলকে পাঠিয়েছেন, সবার দায়িত্ব ছিল মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করা। আল্লাহর একত্ববাদের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, উপাসনার উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহই—এ ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আপনার আগে আমরা যে রাসুল প্রেরণ করেছি তার কাছে এই মর্মে ওহি পাঠিয়েছি যে আমি ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই, সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত করো।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ২৫)
যেহেতু আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী, তারপর আর কোনো নবী আসবেন না, তাই মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করার দায়িত্ব উম্মতের ওপর এসেছে। মহান আল্লাহ এ কাজটির কারণেই এই উম্মতকে অন্য উম্মতদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা দেয়, তাদের মহান আল্লাহ শ্রেষ্ঠ উম্মত বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য যাদের বের করা হয়েছে; তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দেবে, অসৎ কাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে।’
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)

এর বিপরীতে যারা অসৎ কাজ দেখে তা থেকে মানুষকে সতর্ক করে না, তাদের এই কাজকে মহান আল্লাহ নিকৃষ্ট কাজ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা যেসব গর্হিত কাজ করত তা থেকে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৭৯)

অর্থাৎ মানুষকে শুধু সৎ কাজের আদেশ দিলেই দায়িত্ব পালন হয়ে যাবে না, বরং কোনো অসৎ কাজ দেখলে তার প্রতিবাদ করতে হবে।

মানুষকে বুঝিয়ে শুনিয়ে সে পাপ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করতে হবে। যদি কেউ পরিপূর্ণভাবে মহান আল্লাহর এই আদেশ পালন করতে পারে, মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করতে পারে, তাদের জন্য মহান আল্লাহর আরো অনেক বিশেষ পুরস্কার রয়েছে।
তার মধ্যে অন্যতম পুরস্কার হলো এই কাজের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়, যা প্রত্যেক মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু, তারা সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎ কাজে নিষেধ করে, নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে; তারাই, যাদের আল্লাহ অচিরেই দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : তাওবা : ৭১)

এই আয়াতে মহান আল্লাহ দাওয়াতের কাজে আত্মনিয়োগকারীদের রহমত করার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকের মতে, নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদানের বিধানের আগে দাওয়াতের কথা উল্লেখ করে এর গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।

এই কাজ মহান আল্লাহর কাছে এতটাই পছন্দনীয় যে যাকে তিনি সফলতার সূত্র বলে আখ্যা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎ কাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে; আর তারাই সফলকাম।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)

এ ছাড়া মহান আল্লাহ তাঁর পথে আহ্বানকারীদের কথাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কথা বলে আখ্যা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম যে আল্লাহর দিকে আহ্বান জানায় এবং সৎ কাজ করে। আর বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা : হা-মিম সাজদা, আয়াত : ৩৩)

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন 

সর্বশেষ খবর