কোনো বিশ্বাসকে ঈমান ও আকিদার অংশ মনে করার জন্য শরিয়তের গ্রহণযোগ্য পাঁচটি উৎস দ্বারা তা প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক। তাহলো—
১. আল-কোরআন : ঈমান, ইসলাম ও শরয়ি বিধি-বিধানের প্রধান উৎস পবিত্র কোরআন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আত্মসমর্পণকারীদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ, পথনির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদস্বরূপ আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করলাম।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৯)
২. সুন্নাহ : মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ বা হাদিস হলো ইসলামী আকিদা ও বিশ্বাসের দ্বিতীয় প্রধান উৎস।কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি মনগড়া কথা বলেন না। কিন্তু (তিনি তাই বলেন) যা তার প্রতি অবতীর্ণ হয়।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩-৪)
মহানবী (সা.)-এর সাহাবিদের ‘আসার’ (অনুসৃত পথ ও পদ্ধতি) সুন্নাহের অন্তর্ভুক্ত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নত এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলিফাদের সুন্নত অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। সাবধান! (ধর্মে) প্রতিটি নব আবিষ্কার সম্পর্কে! কেননা প্রতিটি নব আবিষ্কার হলো বিদআত এবং প্রতিটি বিদআত হলো ভ্রষ্টতা।’
(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৬০৭)
৩. ইজমা : ইজমা বা উম্মতের ঐকমত্য শরিয়তের একটি গ্রহণযোগ্য উৎস। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কারো কাছে সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্যপথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায়, সেদিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব। আর তা কত মন্দ আবাস।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১৫)
৪. যুক্তি ও বুদ্ধি : মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে ইসলাম শরিয়তের উৎস হিসেবে স্বীকার করে। ইসলাম অযৌক্তিক কোনো ধর্ম নয়। তবে শর্ত হলো সে যুক্তি ও বুদ্ধি হতে হবে সর্বজনীন ও সুস্থ। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘যা কিছু সরাসরি যুক্তিবিরোধী তা বাতিল এবং যা কোরআন, সুন্নাহ ও ইজমায় নেই—তাও বাতিল। তবে তাতে (কোরআন ও সুন্নাহ) এমন কিছু শব্দ আছে, যা কতক মানুষ বুঝতে সক্ষম নয় অথবা তা থেকে ভুল অর্থ গ্রহণ করে।
(ফলে তারা যে ব্যাখ্যা দাঁড় করায়) তা তাদের সৃষ্ট ফিতনা, কোরআন ও সুন্নাহর অংশ নয়।’ (মাজমুউল ফাতায়া : ১১/৪৯০)
৫. সুস্থ মানব প্রকৃতি : সুস্থ মানব প্রকৃতিও শরিয়তের উৎস। কেননা কোরআনে সুস্থ মানব প্রকৃতিকে ‘সরল-সঠিক দ্বিন’ বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দ্বিনে প্রতিষ্ঠিত করো। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ করো, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই। এটাই সরল দ্বিন। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ জানে না।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ৩০)
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন