২৮ মার্চ, ২০২২ ১৫:৫৮

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় হাতাহাতি, সাসপেন্ড ৫ বিজেপি বিধায়ক

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় হাতাহাতি, সাসপেন্ড ৫ বিজেপি বিধায়ক

ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নজিরবিহীন ঘটনা। রাজ্যটির বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের নৃংশস ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠল বিধানসভা চত্বর। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা। পোশাক ধরে টানাটানি, মারপিট, এমনকি ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। গোটা ঘটনায় বিজেপির পাঁচজন বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

সোমবার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন বিধানসভা চলাকালীন রামপুরহাটের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিবৃতি দাবি করে বিরোধীরা। সেই সাথে গোটা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগ তুলে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন বিধানসভা চলছে অথচ সেখানে সরকারিভাবে এই ইস্যুতে যাবতীয় সরকারি ঘোষণা বাইরে করা হলো? তাদের দাবি সংসদীয় ব্যবস্থায় এটা করা যায় না। একসময় প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। স্পিকারের চেয়ার ঘিরে ধরেন তারা। সেসময় ওই জায়গায় চলে আসেন তৃণমূলের বিধায়করাও।

একসময় হঠাৎ করেই উত্তেজনা ছড়ায়। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। জামার কলার ধরে টানাটানি শুরু হয়ে যায় বিধায়কদের মধ্যে। ধস্তাধস্তির মধ্যেই মাটিতে পড়ে যায় বিধায়ক নরহরি মাহাত। বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরেক বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির চুলের মুঠি ধরে টানা হয় বলে অভিযোগ। হাতাহাতিতে তৃণমূলের বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফেটে যায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অ্যাম্বুলেন্সও ডাকতে হয়। অসিম মজুমদারকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।

ওই গোলমালের পরই বিজেপির পাঁচ বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী,  মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ, দীপক বর্মন, নরহরি মাহাতো’কে সাসপেন্ড করে বিধানসভার স্পিকার বিমান ব্যানার্জি। গোটা ঘটনার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে ভৎর্সনা জানিয়ে স্পিকার বলেন, ‘বিধানসভা শুধু হট্টগোল করার জন্য নয়। আপনারাই অধিবেশন চলতে দিচ্ছেন না।’ 

গোটা ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বিধানসভায় বিরোধীদের কোনো জায়গা নেই। আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। আমাদের একাধিক বিধায়ককে কিল-ঘুষি মারা হয়েছে। সাধারণ পোশাকে কলকাতা পুলিশের কিছু লোককে বিধানসভার ভেতরে লোক ঢোকানো হয়েছিল। বিধানসভার ভেতরেও বিজেপি বিধায়করা নিরাপদ নয়।’

রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের অভিযোগ ‘বিজেপি বিধায়করা নিয়মিত বিধানসভা অধিবেশনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এদিন তারা মার্শালদের ওপরও হামলা চালিয়েছেন, এমনকি আমাদের বিধায়কদেরও মারধর করে।’

এদিকে, বগটুই গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ জন। এদিনই নিজের শরীরের শতকরা ৬৫ ভাগ অগ্নিদগ্ধ নাজেমা বিবির মৃত্যু হয় হাসপাতালে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর