আগামী ৩০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে চলেছে ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার। ওইদিন দুপুর ২টায় কলকাতার কাছেই সল্টলেকের 'সেন্ট্রাল পার্ক' প্রাঙ্গনে এই বইমেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্পেনের ক্রীড়া এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন 'বুকস অ্যান্ড প্রমোশন রিডিং' বিভাগের মহাপরিচালক মারিয়া যোসে গালভেজ সালভাদর, বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। যদিও পরদিন ৩১ জানুয়ারি মেলা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে।
স্পেন, বাংলাদেশ, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশ অংশগ্রহণ করছে। সেক্ষেত্রে বইমেলায় প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে থাইল্যান্ড। বইমেলায় এবারের থিম কান্ট্রি 'স্পেন'। স্বাভাবিকভাবে বইমেলার প্রাণকেন্দ্রে থাকছে স্পেনের বিশাল মাপের প্যাভিলিয়ন।তবে অন্যবারের মতো এবারের বইমেলাতেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হচ্ছে প্যাভিলিয়ন। বাংলাদেশের বঙ্গভবনের আদলে এই প্যাভিলিয়নটি করা হচ্ছে। এখানেই অংশ নেবে বাংলাদেশের মোট ৪৩টি প্রকাশনা সংস্থা, যার মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, মাওলা ব্রাদার্স, অন্বেষা প্রকাশন, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, অনিন্দ্য প্রকাশ, নালন্দা, সাহিত্য প্রকাশ ও অবসর প্রকাশনা সংস্থা প্রমুখ।
এবার কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ দিবস পালিত হবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন বাংলাদেশ থেকে যোগ দেবেন প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বরা। এবার বইমেলা জুড়ে মোট স্টলের সংখ্যা প্রায় ৭০০টি, লিটল ম্যাগাজিন ২০০টি। সেক্ষেত্রে কলকাতা বইমেলার ইতিহাসে সর্বোচ্চ মোট ৯০০ স্টল অংশ নিচ্ছে এবারের বইমেলায়।
পাঠক ও বইপ্রেমীদের চলাফেরার সুবিধার্থে বইমেলায় প্রবেশ ও বাহির সহযোগে ৯টি গেট করা হচ্ছে। এরমধ্যে একটি স্পেনের টোলেডো গেট, একটি বিশ্ব বাংলা, অন্যটি কাজী নজরুলের অগ্নিবীণার আদলে তৈরি হবে। উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে বইমেলা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে 'সিইএসসি সৃষ্টি সম্মান' এ পুরস্কৃত করা হবে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে। বইয়ের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে থাকছে লটারি, যেখানে জয়ীদের দেওয়া হবে বুক গিফট কুপন।
৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার প্রধান আকর্ষণ কলকাতা সাহিত্য উৎসব। বইমেলার এসবিআই অডিটোরিয়ামে ৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নবমতম উৎসবে অংশগ্রহণ করবে দেশ বিদেশের প্রখ্যাত লেখক, সাহিত্যিকরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার পাঁচ তারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে করে বইমেলা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেন কলকাতা বই আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজক সংস্থা বুক সেলারস অ্যান্ড গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। আমাদের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সুধাংশু শেখর দে।
চলতি বছর বইমেলাকে পরিবেশ বান্ধব করে তোলার জন্য বনদপ্তর এগিয়ে এসেছে। পরিবেশ বান্ধব সবুজ বইমেলা করার লক্ষে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেদিকে তাকিয়েই আগুন জ্বালিয়ে বইমেলা প্রাঙ্গণে কোন রান্না করা যাবে না। যে কারণে ১০০ মিটার দূরে আলাদা জায়গা করা হয়েছে রান্নার জন্য। সেখান থেকে খাবার নিয়ে এসে ফুড কোর্টে বিক্রি করতে পারবেন বিক্রেতারা। মেলায় ভিড়ের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত বাস পরিষেবা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। মেট্রো ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক