১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ১৪:০৫

সূর্যের দাবদাহে অতিষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

সূর্যের দাবদাহে অতিষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ

দাবদাহের হাত থেকে এখনই নিস্তার পাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। আগামী চার দিন (১৩-১৬ এপ্রিল) রাজ্যজুড়ে এই তাপপ্রবাহ চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। স্বাভাবিকভাবেই কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় প্রচণ্ড গরমে জীবন যাপন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। 

বুধবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সর্বনিম্ন ছিল ২৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবারে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রির আশপাশে। এমন দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। চৈত্রের শেষের আগেই যদি এই গরম হয় তবে বৈশাখ-জৈষ্ঠে পরিস্থিতি কেমন হবে তা ভেবেই দিশাহারা রাজ্যের মানুষ। 

সকাল ১১ টার পর থেকেই রাস্তাঘাট কার্যত খাঁ-খাঁ করছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। আর নিতান্তই যারা বের হচ্ছেন, সূর্যের প্রখর তাপ থেকে বাঁচতে সারা শরীর কাপড়ে মুড়িয়ে নিচ্ছেন। বাইরে বের হলেও তাপপ্রবাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে সকাল সকাল কাজ সেরে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাতেও নিস্তার নেই, বাইরে বইছে গরম হাওয়া। প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বাড়ছে সর্দি, জ্বর, বমি, মাথা ঘোরার মতো ঘটনা। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের আবহাওয়ায় হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে। হতে পারে ডিহাইড্রেশনের সমস্যাও। 

রৌদ্রের তাপে শুকিয়ে যাচ্ছে নদীর পানি। গরমের হাত থেকে বাঁচতে ঠান্ডা পানীয়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা পানীয়, লাচ্ছি ও ডাবের পানির। 

এদিকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে যারা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন, তাদের অবস্থা আরও দুর্বিষহ। কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাদের বারবার মুখ ও মাথায় পানি ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাজপথে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের শারীরিক সুস্থতার কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েল পানির বোতল, রোদ চশমা, ছাতা, মাস্ক ও স্যানিটাইজার তুলে দেন তাদের হাতে। 

 আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গোটা রাজ্যে দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। আগামী ১৫ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এটা চলবে। শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে এবং দক্ষিণবঙ্গ বা উত্তরবঙ্গ- কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। 

সতর্কতা হিসেবে তিনি সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বেশি পরিশ্রমের কাজ না করা, বার বার পানি খাওয়া, ঢিলাঢালা জামা পরিধানের পরামর্শ দেন।

এদিকে আগামী ২ মে থেকে রাজ্যের স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। বৃহস্পতিবারে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গরমের ছুটির পর নতুন করে যখন স্কুল খুলবে, সে সময় শিক্ষকদের অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ গরমের ছুটি আগে পড়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের স্কুলের পঠন-পাঠন প্রক্রিয়া যেটুকু পিছিয়ে যাবে, অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে তা পূরণ করতে হবে। তবে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ছুটি সম্পর্কিত এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে না বলে জানানো হয়েছে। 

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর