প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার আর নেই। সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে কলকাতায় একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে তিনি। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে খবরটি নিশ্চিত করেন সমরেশ মজুমদারের বড় মেয়ে দোয়েল মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘বাবা আর নেই। বিকেলে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। গত দু’তিন দিন তার অবস্থার অনেকটাই উন্নতি ঘটে। আমরাও আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু আজ তার একটি মেজর কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়। সেখান থেকে আর প্রত্যাবর্তন হয়নি তার।’
দোয়েল মজুমদার আরো বলেন, ‘বাবার মরদেহ কাল সকালে শ্যামপুকুরের বাড়িতে কিছুক্ষণ রাখা হবে। এরপর সেখান থেকে বালিঘাটে নেওয়া হবে শেষকৃত্যের জন্য।’সমরেশ মজুমদার গত দু’সপ্তাহ আগে ফুসফুস ও শ্বাসনালী সংক্রমণের কারণে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার রক্তে কার্বনডাই অক্সাইডের মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল। আইসিইউতে রাখা হয়েছিল তাকে। গত শনিবার তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটে। ভ্যান্টিলেশন সাপোর্টও খুলে রাখা হয়।
৭৯ বছর বয়সী এই সাহিত্যিকের শ্বাসনালীতে গভীর সংক্রমণ ছিল। গত এক যুগ ধরেই ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।
সমরেশ মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনে কলাম, ঈদ সংখ্যা ও বিশেষ সংখ্যায় নিয়মিত লিখতেন। তার সর্বশেষ লেখাটি (গল্প) এবারের ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবারের সঙ্গে অন্যরকম সখ্য ছিল তার। বাংলাদেশ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে তাকে আজীবন সম্মাননাও দেওয়া হয়েছিল।
সমরেশ মজুমদার ১৯৪৪ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার কালজয়ী উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে উত্তরাধিকার, কালবেলা ও কালপুরুষ। এ ছাড়া তিনি বেশকিছু সফল টিভি সিরিয়ালেরও কাহিনিকার। সমরেশের সৃষ্ট চরিত্র অর্জুন ও মাধবীলতা ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশেই সমান জনপ্রিয়। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রথম তার লেখা প্রকাশিত হয়। জনপ্রিয় এই লেখক অসংখ্য সম্মাননা অর্জন করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল