শিরোনাম
২ জুন, ২০২৩ ১২:২৪

অসুস্থ গণমাধ্যমকর্মীকে দেখতে মোটরসাইকেলে হাসপাতালে গেলেন মমতা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

অসুস্থ গণমাধ্যমকর্মীকে দেখতে মোটরসাইকেলে হাসপাতালে গেলেন মমতা

অসুস্থ গণমাধ্যমকর্মীকে দেখতে মোটরসাইকেলে হাসপাতালে গেলেন মমতা

এক অসুস্থ ভিডিও জার্নালিস্টকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তবে নিজের ব্যক্তিগত গাড়িবহরে নয়, কলকাতা পুলিশের একটি মোটরসাইকেলের পিছনে বসে হাসপাতাল গেলেন মমতা। আর তার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে হাসপাতাল পৌঁছলেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরাও।

নাবালিকাসহ নারী ক্রীড়াবিদদের উপর যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে ‘রেসলিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (ডব্লিউএফআই)’ সভাপতি ব্রিজ ভুষণ স্মরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে দিল্লিতে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন ভারতের কুস্তিগীররা। সেই কুস্তিগীরদের সমর্থনে ও তাদের আন্দোলনকে সহমর্মীতা জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে কলকাতা ধর্মতলা চত্বরে প্রয়াত ফুটবলার গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মমতা। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসসহ একাধিক ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। এরপর গোষ্ঠ পালের মূর্তির সামনে থেকে মোমবাতি হাতে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত একটি মিছিলে হাঁটেন মমতাসহ বাকিরা। আর সেই অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েই এক ভিডিও জার্নালিস্ট অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাথে সাথেই তার কাছে ছুটে যান মমতা। তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরাও তখন অসুস্থ ওই গণমাধ্যমের কর্মীর মুখে পানি ছিটা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেন। 

এদিকে অসুস্থ ওই সাংবাদিককে হাসপাতালে পাঠানোর জন্য নিজের ব্যক্তিগত গাড়িটি ডেকে পাঠান মমতা। পরে মমতার গাড়ি আসলেই সেই গাড়িতে করে তাকে কলকাতার ‘শেঠ শুকলাল কারনানি মেমোরিয়াল (এসএসকেএম) হাসপাতালে’ পাঠানো হয়। এরপর মিছিল শেষ করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠান শেষ করে মমতাও অসুস্থ সাংবাদিককে দেখতে হাসপাতালে ছুঁটে যান। 

আর হাসপাতালে যাওয়ার জন্য তিনি কলকাতা পুলিশের একটি মোটরবাইক ডেকে পাঠান। এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে বাইকের পিছনে বসিয়ে তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী।

এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে ওই ভিডিও জার্নালিস্টের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতাল থেকে দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাটে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়িতে ফেরেন মমতা। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন পর কলকাতার রাস্তায় মোটরবাইকে উঠতে দেখা গেল মমতাকে। 

এদিকে গোষ্ঠ পালের মূর্তির নিচের সমাবেশ থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, “কুস্তিগীরদের সাথে যে ধরনের ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে আমি দেশের নাগরিক হিসেবে লজ্জিত।”

ব্রিজ ভূষণ সিংকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পকসো আইনে এটা গুরুতর অপরাধ। কিন্তু তার গ্রেফতারের বদলে, নাটক করে ভয় দেখানো হচ্ছে, ধমকানো হচ্ছে, চমকানো হচ্ছে। যারা প্রকৃত খেলোয়াড়, তাদেরই খেলতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্বের যে কুস্তি সংস্থা আছে, সেই ওয়ার্ল্ড রেসলার্স অর্গানাইজেশন বলছে এরকম চলতে থাকলে তারা ভারতের লাইসেন্স বাতিল করে দেবে। কার জন্য? নন্দলাল এখন চুপ কেন?”

খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তাম “আপনারা লড়াই ছাড়বেন না। এটা জীবনের লড়াই, সত্যের জন্য লড়াই। কাউকে না কাউকে তো বিড়ালের গলায় ঘণ্টাটা বাঁধতেই হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত (কোচ) গ্রেফতার হবে, আইন কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না। এই লড়াই আমাদের স্বাধীনতার লড়াই। যতক্ষণ না কুস্তিগীররা স্বাধীনতা পাবে, ততদিন এই লড়াই চলবে।”

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর