মাঝ আকাশে প্লেনের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত এক বাংলাদেশি শিশু। এরপর ভারতের নাগপুরে প্লেনের জরুরি অবতরণ করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হলো না। তিন দিন পর বৃহস্পতিবার মৃত্যু হলো ১৫ মাস বয়সী ওই বাংলাদেশি শিশুর।
জানা গেছে, ২৭ আগস্ট রাতের দিকে বাবা-মায়ের সাথে সাথেভিস্তারা এয়ারলাইন্সের একটি প্লেনে ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লি যাচ্ছিল শিশুটি। কিন্তু হঠাৎ করেই প্লেনের মধ্যে অসুস্থতা বোধ করে সে। এরপর প্লেনের গতিপথ ঘুরিয়ে রাতেই নাগপুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করা হয়। এরপর বিমানবন্দর থেকেই নাগপুরের একটি বেসরকারি মাল্টিস্পেশালটি হাসপাতালে (কেআইএমএস-কিংসওয়ে) ভর্তি করা হয় তাকে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় এবং মৃত্যু হয় শিশুটির।
জানা গেছে, প্লেনের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয় সিলেটের বাসিন্দা ওই শিশুটি। বাবা-মা'য়ের কলেই সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে পড়ে শিশুটি। এসময় প্লেনের সহযাত্রীরা তাকে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) ব্যবস্থার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেন। প্লেনের সহযাত্রীদের মধ্যে দিল্লির 'অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস' (এইমস) এর পাঁচ চিকিৎসকও ছিলেন বলে জানা গেছে। তাদের অনবরত প্রচেষ্টায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। এরপর নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণের পরে শিশুটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে।নাগপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল কেআইএমএস-কিংসওয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এজাজ শামি (ব্র্যান্ডিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন) জানান 'তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার ভোর ৩.১৫ মিনিট নাগাদ শিশুটি মারা যায়।'
তিনি আরো জানান, 'প্লেনের ভেতর এবং হাসপাতালে নিয়ে আসার পর থেকে তাকে অচেতন অবস্থা থেকে পুনরুজ্জীবিত করার একাধিকবার প্রচেষ্টা চালানো হলেও তা ব্যর্থ হয়। চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে হাসপাতালের সকলে মিলে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি। শিশুটি কিডনি এবং কার্ডিয়াক ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন শারিরীক জটিলতায় ভুগছিল বলেও জানান এজাজ শামি। একটা সময় তার বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। আরও জানা গেছে, বেঙ্গালুরুর নারায়ণা হাসপাতালে ওই শিশুটির হৃদরোগের অস্ত্রপ্রচার হয়েছিল।
হাসপাতাল সূত্রে খবর শুক্রবারই ওই শিশুটির লাশ নিয়ে বাংলাদেশ ফিরবে তার বাবা-মা। ইতিমধ্যেই লাশ নিয়ে আসার আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন হয়েছে। নাগপুর থেকে দিল্লি হয়ে বাংলাদেশের সিলেটে নিয়ে আসা হবে ওই শিশুটিকে।
বিডি প্রতিদিন/এএম