শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

আশ্রয় কেন্দ্রে লাখো মানুষ চট্টগ্রামে শঙ্কা কাটেনি

ঘূর্ণিঝড় মহাসেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় আঘাত হেনেছে। তবে উপজেলার উড়িরচর, আজিমপুরসহ কয়েকটি এলাকার কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছপালা উপড়ে পড়লেও বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। ঘূর্ণিঝড় মহাসেন সন্দ্বীপে আঘাত হানার সময় বেড়িবাঁধ ডিঙিয়ে উপজেলার কাজীপাড়া দিয়ে জলোচ্ছ্বাসের পানি জনবসতিতে ঢুকে পড়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় ঝড় শুরু হয়ে দমকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম বোর্ডের ইংরেজি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। এটি ৩ জুন সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম নগর বা অন্য কোনো উপজেলায় বড় ক্ষতি হয়নি। তবে এখনো শঙ্কা ও আতঙ্ক কাটেনি। বৈরী আবহাওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়, উপকূল ও অরক্ষিত বেড়িবাঁধসহ নানা কারণে আতঙ্ক ভর করেছে মানুষের মধ্যে। প্রতিকূল আবহাওয়ার সময় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সসহ বিভিন্ন সংগঠন। পতেঙ্গার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আঘাত হানার পর দুর্বল হয়ে পড়ে। মহাসেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, ফেনী, ভারতের কিছু অংশ (ত্রিপুরা) হয়ে মিয়ানমারের দিকে এগিয়ে যায়। তবে আজ সকালে বৃষ্টিপাত কম হবে বলে আবহাওয়া অফিস ধারণা করছে। পতেঙ্গার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সাইমুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সন্দ্বীপে সামান্য আঘাত হেনে মিয়ানমারের দিকে চলে যায়। তবে আপাতত কোনো শঙ্কা নেই। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মহাসেনের আঘাত থেকে রক্ষায় উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। ১৪টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে আনোয়ারা থেকে এক লাখ, বাঁশখালী থেকে ৭০ হাজার, সন্দ্বীপ থেকে ৫০ হাজার, সীতাকুণ্ড থেকে সাত হাজার, মিরসরাই থেকে দুই হাজার ও পটিয়া উপজেলা থেকে এক হাজার লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়। এ ছাড়া বন্দরনগরীর উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরতদের সিটি করপোরেশনের ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সন্দ্বীপে আঘাত হানার সময় জলোচ্ছ্বাসের পানি জনবসতিতে ঢুকে যায়। সেখানে ১০৭টি আশ্রয় কেন্দ্র থাকলেও আক্রান্ত উড়ির চরে ছিল অপ্রতুল। সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-খাজা আল আমিন বলেন, জলোচ্ছ্বাসে পানি উঠলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আক্রান্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সাগর উত্তাল রয়েছে, জলোচ্ছ্বাসে পানি দ্রুত বাড়ছে। এলাকার মানুষ মূল্যবান সম্পদ ও প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

সর্বশেষ খবর