শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

বর্ষায় খোঁড়াখুঁড়িতে দুর্ভোগ

বর্ষায় খোঁড়াখুঁড়িতে দুর্ভোগ
ঢাকা মহানগরীর সড়কগুলোতে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। অলিগলি থেকে ব্যস্ত রাজপথ, সর্বত্র চলছে সড়ক খনন। পাড়ামহল্লা থেকে শুরু করে অভিজাত আবাসিক এলাকাগুলোতেও চলছে একই অবস্থা। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে খোঁড়াখুঁড়ি। রাজধানীর সড়কগুলোর বিদ্যমান চেহারা গ্রামের মেঠোপথকেও হার মানিয়েছে। এসব সড়কে চলাচল করতে নগরীর জনজীবনে রীতিমতো নাভিশ্বাস বইছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো সড়কের খনন করার প্রয়োজন দেখা দিলে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে তা শেষ করতে হবে। আর বর্ষা মৌসুমের আগেই সব সড়ক খোঁড়খুঁড়ি শেষ করতে হবে। কাগজে কলমে এমন নিয়ম-কানুন থাকলেও বাস্তব চিত্র তার উল্টো। জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সড়ক খননের যে নীতিমালা আছে সেই অনুযায়ী আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ক্ষতিপূরণ আদায় করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজও শেষ হচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসবের ব্যত্যয়ও ঘটছে। এসব নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সড়ক খননের নিয়ম লঙ্গনের ব্যাপারে বেশি অভিযোগ ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে। এক মাসের অনুমোদন নিয়ে মাসের পর মাস খোঁড়াখুঁড়ি করে ওয়াসা। ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমসি করে। ডিসিসিকে তোয়াক্কা না করাসহ বহুবিধ অভিযোগ ওয়াসার বিরুদ্ধে। জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী এসডিএস কামরুল আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের ব্যাপারে ঢালাও যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। তবে এটা সত্য যে কিছু কিছু কাজ আমাদের দীর্ঘ সময় নিয়ে করতে হয়। এটা সময় বেঁধে দিলেও মানা সম্ভব নয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে খোঁড়াখুঁড়ির ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে। কূটনৈতিকপল্লী হিসেবে পরিচিত বারিধারা এলাকার মার্কিন দূতাবাসসংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী এভিনিউ এলাকায় এখন চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। অভিজাত এলাকা গুলশানের প্রধান সড়কটি গুলশান এভিনিউয়ের গুলশান ২ নম্বর থেকে তেজগাঁও লিংক রোড পর্যন্ত কয়েক মাস আগেই মেরামত করে আধুনিকায়ন করা হয়েছিল। ওই সড়কেরও এক পাশে কয়েক ফুট চওড়া করে কেটে খনন করা হয়েছে। গত ৩০ মার্চের মধ্যে সড়কটিতে ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ঢাকা ওয়াসাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা কাজ শেষ করতে পারেনি। মিরপুর এলাকায় দেখা গেছে, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে কাজীপাড়া পর্যন্ত রোকেয়া সরণিতে চলছে ঢাকা ওয়াসার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ। মিরপুর রোডের শ্যামলী থেকে মাজার রোড পর্যন্ত সড়কেও পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে। কলাবাগান থেকে উত্তর ধানমন্ডি এলাকায় গ্যাস পাইপলাইনের কাজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার কথা বলে দুই মাস আগে সিটি করপোরেশনের ওয়ান স্টপ সেল থেকে অনুমতি নিয়েছিল তিতাস কর্তৃপক্ষ। সেই কাজ অর্ধেকও হয়নি। আরও অন্তত এক মাস লাগবে বলে তিতাস সূত্রেই জানা গেছে। একইভাবে ডিপিডিসির পক্ষ থেকে ১১ কেভি ভূগর্ভস্থ ক্লেভ স্থাপনের জন্য ২৫৬ এলিফ্যান্ট রোড থেকে সোনারগাঁও রোড পর্যন্ত সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এদিকে কলাবাগান থেকে উত্তর ধানমন্ডি এলাকায় গ্যাস পাইপলাইনের কাজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার কথা বলে দুই মাস আগে সিটি করপোরেশনের ওয়ান স্টপ সেল থেকে অনুমতি নিয়েছিল তিতাস কর্তৃপক্ষ। সেই কাজ অর্ধেকও হয়নি। আরও অন্তত এক মাস লাগবে বলে তিতাস সূত্রে জানা গেছে। একইভাবে ডিপিডিসির পক্ষ থেকে ১১ কেভি ভূগর্ভস্থ ক্যাবল স্থাপনের জন্য ২৫৬ এলিফ্যান্ট রোড থেকে সোনারগাঁও রোড পর্যন্ত সড়কের অনুমতি নিয়ে ৩০ মার্চের মধ্যে কাজ শেষের ওয়াদা দিয়ে তারা এখনো কাজ শেষ করেনি। এ ছাড়াও রাজমনি সিনেমা হলের মোড় থেকে পূর্বে স্কাউট ভবন পর্যন্ত এলাকায় ১০ দিনের মধ্যে স্টিল প্লেট বসিয়ে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সে কাজ এখনো শেষ করা হয়নি।

সর্বশেষ খবর